গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ – গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
![গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ - গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা](https://shikhibd.com/wp-content/uploads/2024/07/Untitled-design-2.png)
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ – গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা : বেশির ভাগ লোকেরই ১ সপ্তাহের গর্ভাবস্থায় কোনো লক্ষণ থাকে না। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে তাড়াতাড়িই গর্ভধারনের লক্ষণগুলো অনুভব করতে পারে। আজকে আমরা এমন কিছু লক্ষণ সম্পর্কে জানবো যা হয়তো অনেকের ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে, তবে না জানার কারণে তারা বুঝতে পারেন না।
চিকিৎসকরা সাধারণত শেষ মাসিক এর পর প্রথম দিন গতে গর্ভাবস্থার হিসাব শুরু করে থাকেন। যদিও একজন নারী শেষ মাসিকের প্রথম দিনই গর্ভধারণ করেন না । বরং অন্তত শেষ মাসিকের এক সপ্তাহ পর থেকে গর্ভাবস্থা শুরু হয়।
![গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ - গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা](https://shikhibd.com/wp-content/uploads/2024/07/Untitled-design-2.png)
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ – গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
গর্ভাবস্থা কেন হয় ?
যখন একজন নারীর ডিম্বাশয় ডিম্বাণু নির্গত করে এবং একজন পুরুষের শুক্রাণু সেই ডিম্বাণুকে নিষিক্ত কর তখন সেখানে ভ্রুণের সৃষ্টি হয়। এভাবেই একজন নারী গর্ভধারণ করে থাকেন।
আসুন আমরা গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ গুলো জেনে নিই
গর্ভবতী হবার একদম শুরুতেই যে লক্ষণগুলো দেখা দেয় তা হলো
১। মাসিক বন্ধ হওয়া : গর্ভাবস্থার প্রথম লক্ষন হচ্ছে মাসিক বন্ধ হওয়া। অর্থাৎ ধরুন, গত মাসের ১০ তারিখে পিরিয়ড শুরু হয়েছিল এবং চলতি মাসের ১০ মারিখে আবার পিরিয়ড আসার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আসছে না। এটা গর্ভাবস্থার অন্যতম একটি লক্ষণ ।
২। রক্তপাত : গর্ভবতী হবার আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে কোনো কোন নারীল ক্ষেত্রে হালকা রক্তপাত হতে পারে। এটা মাসিকের রক্তের মতো নয় বরং হালকা গোলাপী টাইপের । এটি একদিন বা দু-তিনদিন স্থায়ী হতে পারে।
৩। জড়তা : ভ্রুণ জরায়ুর প্রাচীরের সাথে সংযুক্ত হওয়ার কারণে হালকা জড়তা অনুভব করতে পারেন। কেউ কেউ তলপেট বা কোমরের নিচের অংশের দিকে এই জড়তা অনুভব করতে পারেন। জড়তা হচ্ছে এক ধরনের টান লাগা অনুভূত হওয়া ।
৪। বমি বমি ভাব : গর্ভাবস্থার শুরুতে বমি বমি ভাব অনুভব করতে পারেন। বিশেষ করে কিছু কিছু খাবার যা পছন্দ নয় তা খেতে গেলে বমি বমি ভাব বেশি পরিলক্ষীত হতে পারে।
৫। অন্যান্য লক্ষণ : উপরোক্ত লক্ষণগুলি ছাড়াও করো কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে –
ক) স্তনের উপরিভাগে নীল শিরা জেগে ওঠা।
খ) ঘন ঘন মুত্রত্যাগ।
গ) শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া ।
ঘ) ক্লান্তু অনুবব করা।
ঙ) বিরক্তি বা মেজাজ পরিবর্তন হওয়া । ইত্যাদি।
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়
পরিবর্তী মাসিক না আসার সময় থেকেই অর্থাৎ সর্বশেষ মাসিকের পরবর্তী মাসিক আসার সময় থেকেই বিভিন্ন লক্ষণ দেখে গর্ভবতী কিনা তা বোঝা যায়।
মনে রাখতে হবে, গর্ভাবস্থার জন্য এই সবগুলি লক্ষণই একজনের মধ্যে পরীলক্ষিত হওয়া জরুরী নয়। আর এসব লক্ষণগুলো কারো আগে কারো একটু পরেও প্রকাশ পেতে পারে ।
শহীদ মিনার-জাতীয় পতাকা ও স্মৃতিসৌধ অংকন পদ্ধতি
গর্ভাবস্থায় বাড়তি খাবার কেন প্রয়োজন
একজন নারীর গর্ভবতী হওয়া তার জীবনের একটি অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ সময়। এসময় একজন নারীর পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টির প্রয়োজন হয়। কেননা, তার গর্ভস্থ সন্তানের গঠন ও বৃদ্ধির জন্য বাড়তি পুষ্টি প্রয়োজন। আর এই পুষ্টি সন্তান তার মা থেকেই পেয়ে থাকে । তাই একজন গর্ভবতী মায়ের নিজের ও সন্তানের অর্থাৎ দুজনের পুষ্টিগুনের প্রয়োজন দেখা দেয় ।
ফলিক এসিড : ফলিক এসিড ভিটামিন বি গ্রুপের অন্তর্গত একটি পুষ্টি উপাদান যা গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি ভ্রুণের নিউরাল টিউবের ত্রুটি প্রতিরোধ করে। গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে ফলিক এসিড গ্রহণ করা জরুরী।
আয়রন : রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির জন্য আয়রন একটি অপরিহার্য উপাদান । গর্ভাবস্থায় রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথে আয়রন বৃদ্ধির দিকেও গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।
ক্যালসিয়াম : গর্ভস্থ সন্তানের বৃদ্ধি ও বিকাশে ক্যালসিয়াম অপরিহার্য । মায়ের হাড়ের ক্ষয় রোধ করে হাড়কে মজবুত করতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম জরুরী।
প্রোটিন :প্রোটিন ভ্রুণের সার্বিক বৃদ্ধি ও মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য জরুরী।
পানি : পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, টক্সিন বের করে এবং ডিহাইড্রেশন দূর করে। দৈনিক অন্তত ১০-১২ গ্লাস পানি পান করা উচিত ।
![গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা](https://shikhibd.com/wp-content/uploads/2024/07/Untitled-design-3.png)
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
গর্ভাবস্থায় মায়েদের যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ফলিক এ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, প্রোটিন ইত্যাদি প্রয়োজন তাই বিভিন্ন ধরনের ফলমূল, শাক-সবজি, আঁশ জাতীয় খাবার খাওয়া দরকার।এসময় শাক-সবজি, লেবু জাতীয় ফল, মাংস, বাদাম, ডাল, ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি বেশি এবং নিয়মিত খাওয়া দরকার।
বিভিন্ন বয়সের মানুষের সুষম খাদ্যের তালিকা
গর্ভবতী মায়ের সুষম খাদ্যের তালিকা
ক্রমঃ নং | খাদ্য তালিকা | পরিমাণ (প্রতিবেলা) |
০১ | ভাত/রুটি | ২৬০ গ্রাম |
০২ | টাটকা শাক | ১২০ গ্রাম |
০৩ | সবজি | ৮০ গ্রাম |
০৪ | ডাল | ৪০ গ্রাম |
০৫ | ছোট মাছ বা মাংস | ৬০ গ্রাম |
০৬ | মৌসুমি ফল | ১৫০ গ্রাম |
০৭ | চিনি/মধু/গুড় | ২০ গ্রাম |
০৮ | দুধ | ২৫০ গ্রাম |
০৯ | ডিম | ২০ গ্রাম |
মোট | ১০০০ গ্রাম |
একজন নারীর গর্ভধারণ নিশ্চিত হবার পর তার সার্বিক যত্ন নিশ্চিত করতে হবে। গর্ভাবস্থায় নারীর শারীরিক ও মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হওয়া জরুরী। একজন সুস্থ, সবল শিশু আগামী প্রজন্মের কর্ণধার। তাই গর্ভবতী মায়ের যত্নের প্রতি সচতন হওয়া জরুরী। ইউনিসেফ থেকে গর্ভবতীর স্বাস্থ্য পরিচর্যা সমূহ জানতে পারেন।
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ – গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা – সংক্রন্ত পোস্টটি সম্পর্কে আপনাদের মতামত কমেন্টবক্সে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।