জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থা Education System of Japan
জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থা Education System of Japan : বিশ্বের অন্যতম আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা হচ্ছে জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থা। প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে জাপানে আসে শুধু জাপানের শিক্ষা পদ্ধতি দেখার জন্য। আসুন আমরা জেনে নিই জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন-
জাপানের প্রাথমিক শিক্ষা আরম্ভ হয় শিশুর ৬ বছর বয়স থেকে। প্রাথমিক শিক্ষা ৬ বছর মেয়াদী। এরপর উচ্চ বিদ্যালয়। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষাও ৬ বছর মেয়াদী। প্রথম ৩ বছর জুনিয়র হাই স্কুল এবং পরের তিন বছর হাই স্কুল। জাপানের বাধ্যতামূলক শিক্ষা হচ্ছে প্রাইমারী থেকে জুনিয়র হাইস্কুল পর্যন্ত অর্থাত ৯ বছর। জুনিয়র হাই স্কুল এবং হাইস্কুলে ইংরেজি শেখা বাধ্যতামূলক।
জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থা Education System of Japan
জাপানের উচ্চতর শিক্ষা শুরু হয় হাইস্কুল পাশের পর অর্থাত ১২ বছর শিক্ষা ধাপ অতিক্রম করার পর। বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে হয় ৪ বছর। এরপর কেউ মাস্টার্স ডিগ্রি করতে চাইলে লাগবে দু বছর আর ডক্টরেট ডিগ্রি করতে চাইলে লাগবে চার বছর।
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম
শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ শিক্ষাব্যবস্থা রয়েছে ‘স্পেশাল নিডস ইডুকেশন’ নামে।
জাপানের স্কুলের সময়সূচি
সাধারণত জাপানে সপ্তাহে ৫দিন স্কুলে পাঠদান হয়। স্কুল কার্যক্রম চলে সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত। তবে কোনো কোনো স্কুলে ব্যতিক্রম দেখা যায় সেসব স্কুলে সপ্তাহে ৬দিনো শ্রেণি কার্যক্রম চলে।
জুনিয়র হাই স্কুল এবং হাইস্কুল গুলোতে প্রতিদিন ৬টি ক্লাস নেয়া হয়। প্রতিটি ক্লাস সাধারণত ৫০ মিনিট করে হয়।প্রত্যেক ক্লাসের মাঝে ১০ মিনিটের মতো বিরতি থাকে। প্রতিদিনের ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত শিফট্ অনুযায়ী তাদের শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করে। এরপর তারা তাদের ক্লাবের কার্যক্রমে অংশ নেয়। শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী ক্লাবের সদস্য হয়। জাপানে বিভিন্ন ধরনের ক্লাব রয়েছে । যেমন- সাংস্কৃতিক ক্লাব, স্পোর্টস ক্লাব ইত্যাদি।
জাপানের স্কুলের ক্লাস রুটিন
জাপানের স্কুলগুলোতে সাধারণত ক্লাস রুটিন সাধারণত এমন হয়ে থাকে-
Day | Time | ||||||||
8:15 | 8:30 | 9:30 | 10:30 | 11:30 | 12:30 | 13:30 | 14:30 | 15:30 | |
Mon | Morning assembly | 1st Period | 2nd Period | 3rd Period | 4th Period | Lunch | 5th Period | 6th Period | After School |
Tues | |||||||||
Wed | |||||||||
Thurs | |||||||||
Fri |
জাপানের স্কুলে দুপুরের খাবার
জাপানের প্রায় সকল প্রাথমিক ও জুনিয়র হাই স্কুলগুলোতে মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা করা হয়। প্রায় সকল শিক্ষার্থীই তাদের ক্লাসরুমে দুপুরের খাবার খেয়ে থাকে। খাবরের মান অতি উচ্চমানসম্পন্ন।
জাপানের স্কুলের ইউনিফর্মঃ
প্রায় ১৮৬৮ সালের রাজকীয় পছন্দ থেকেই জাপানের বর্তমান ইউনিফর্মগুলো এখনো চলমান।
শিক্ষামূলক ভ্রমণঃ জাপানে স্কুল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণের আয়োজন করা হয়। বিভন্ন মডেল স্কুল, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণসহ নানান শিক্ষামূলক কার্যক্রম এতে অন্তর্ভূক্ত থাকে।
জাপানের স্কুলে সাস্কৃতিক উৎসব
জাপানের বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমকে রঙিন করে তোলার ক্ষেত্রে সাস্কৃতিক উৎসব একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। সাধারণত শরৎকালে এই সাস্কৃতিক উৎসব এই আয়োজন করা হয়। দুই দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠান চলে। মঞ্চে নাটক, নাচ, গানের আসর জমে। এর সাথে হালকা খাবার এবং মিষ্টি বিক্রির বুথ থাকে।
জাপানের একাডেমিক ক্যালেন্ডার
সাধারণত জাপানের শিক্ষা ক্যালেন্ডার শুরু হয় এপ্রিল থেকে। এবং শেষ হয় মার্চ মাসে। প্রতি স্কুলে তিনটি সেমিস্টার থাকে। প্রথম সেমিস্টার এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত, দ্বিতীয় সেমিস্টার সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং তৃতীয় সেমিস্টার জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত।
এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টেম্বর |
১। বিদ্যালয় খোলার অনুষ্ঠান। ২। নতুন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন ৩। স্বাস্থ্য পরীক্ষা | ১। বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম ১। ১ম সেমিস্টার/সাময়িক পরীক্ষা(মিডটার্ম) | ১। ক্রীড়ানুষ্ঠান | ১। ১ম সেমিস্টার (সেমিস্টার ফাইনাল) ২। ১ম সেমিষ্টার বিদায় অনুষ্ঠান | ১। গ্রীষ্মকালীন ছুটি ২। কারিকুলামবহির্ভূত কার্যক্রম। | ১। ২য় সেমিস্টার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। |
অক্টোবর | নভেম্বর | ডিসেম্বর | জানুয়ারি | ফেব্রুয়ারি | মার্চ |
১। ২য় সেমিস্টার/সাময়িক পরীক্ষা(মিডটার্ম) | ১। শরৎকালীন ছুটি ২। ২য় সেমিস্টার শুরুর অনুষ্ঠান | ১। ২য় সেমিস্টার/সাময়িক পরীক্ষা(ফাইনাল) ২। ২য় সেমিস্টার বিদায় অনুষ্ঠান | ১। ৩য় সেমিস্টার শুরুর অনুষ্ঠান | ১। ৩য় সেমিস্টার/সাময়িক পরীক্ষা(মিডটার্ম) | ১। ফাইনাল পরীক্ষা ২। সনদ প্রদান অনুষ্ঠান। |
জাপানের বিদ্যালয় পরিচালনাঃ
প্রত্যেক বিদ্যালয়ে একজন প্রিন্সিপ্যাল, একজন ভাইস-প্রিন্সিপ্যাল, একজন স্কুল নার্স এবং অন্যান্য প্রসাশনিক স্টাফ থাকে। প্রধান নির্বাহী হিসাবে, অধ্যাক্ষ বিদ্যালয়ের প্রদত্ত কোর্স এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কাজসহ সমস্ত দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যক্ষকে স্কুলের প্রশাসনিক বিষয়গুলো পরিচালনা করতে এবং ছাত্রদের শিক্ষামূলক ও পাঠ্যক্রমের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করেন। বিদ্যালয়ের কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালিত হতে শিক্ষকরাও বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। যেমন- শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অগ্রগতির যত্ন নেয়া, যাবতীয় সুবিধা-অসুবিধা তদারকি করা ইত্যাদি।
তথ্যসূত্রঃ education inj
আন্তর্জাতিক মানের জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।।