সমসাময়িকলেখাপড়া

দেবদারু গাছ রোপন । পরিচর্যা ও উপকারিতা

দেবদারু গাছ রোপন । পরিচর্যা ও উপকারিতা : দেবদারু গাছ একটি চিরহরিৎ বৃক্ষ, কাণ্ড মোটা, সোজা ও অতি উঁচু হয় । সাধারণত শোভাবর্ধন হিসাবে রোপণ করা হয়ে থাকে । গাছ ৫০-৬০ মিটার লম্বা হয় এবং ৫০০-৬০০ বছর পর্যন্ত জীবিত থাকে । পাতাগুলো গাঢ় সবুজ, যৌগিক, দেখতে অনেকটা বর্শার মতো কিন্তু কিনারা ঢেউ খেলানো । সাধারণত অক্টোবর মাসে ফুল হয়, ফল পাকে দেরিতে। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই এ গাছ পাওয়া যায় ।

দেবদারু গাছের ছবি
দেবদারু গাছের ছবি

দেবদারু গাছ রোপন । পরিচর্যা ও উপকারিতা

বীজ সংগ্রহের সময় : দেবদারু বৃক্ষের বীজ সংগ্রহ করার সময় জুলাই-আগস্ট মাস।

বীজ সংগ্রহ পদ্ধতি : পাকা ফল কালো রঙের হয়। ফল পাকলে গাছ থেকে বা গাছ তলা থেকে সংগ্রহ করে বস্তায় রেখে পচিয়ে পানিতে ধুয়ে বীজ সংগ্রহ করতে হয় । দেবদারু বীজ সংরক্ষণ করা যায় না বলে সংগ্রহ করার সাথে সাথে তা বীজ তলায় বা পলিব্যাগে বপন করতে হয় ।

দেবদারু গাছ রোপন পদ্ধতি

বীজ বপন পদ্ধতি : প্রতি পলিব্যাগে ২টি করে বীজ বপন করতে হয় । প্রাথমিকভাবে ছায়ার ব্যবস্থা করতে হয় । বীজের অঙ্কুরোদগম হার শতকরা ৯০ ভাগ । ৭-১৫ দিনের মধ্যে অঙ্কুরোদগম সম্পন্ন হয় ।

রোপণের সময় চারার বয়স : দেড় থেকে দুই বছর বয়সের চারা সড়কের পাশে, বাগানের ও উপকূলীয় অঞ্চলে জুন-জুলাই মাসে রোপণ করা উত্তম ।

ব্যবহার : দেবদারু কাঠ হালকা ও নরম । টিনের ধারের ফ্রেম, পাটাতন, দেশলাই ও প্যাকিং বক্স তৈরিতে দেবদারু কাঠ ব্যবহার হয় । কাগজের মণ্ড তৈরিতেও দেবদারু কাঠ ব্যবহৃত হয় ।

উপকূলীয় বনায়নের উপযোগিতা

উপকূলীয় বনায়নের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী তৈরি ও তা সংরক্ষণ করা গেলে বহুবিধ উপকার সাধিত হবে। উপকূলীয় পরিবেশ রক্ষা ভূমির উর্বরতা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন ও টর্নেডোর প্রকোপ থেকে উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষা করা । জ্বালানি ও খাদ্যের চাহিদা মোটানো, অর্থ উপার্জন, ভূমিক্ষয় রোধ ইত্যাদি প্রয়োজনে উপকূলীয় বনায়ন সৃষ্টি ও তা রক্ষণাবেক্ষণ করা একান্ত অপরিহার্য । উপকূলীয় বনাঞ্চলের উপযোগিতা সমূহ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে নিম্নরূপ উপায়ে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে ।

বিশ্বখ্যাত মণীষীদের লেখা বন্ধু নিয়ে স্ট্যাটাস

দেবদারু গাছের উপকারিতা

১। এ বনাঞ্চলের বৃক্ষরাজি উপকূল অঞ্চলের ভূমিক্ষয় রোধ করে । ভূমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে । ভূ-নিম্নস্থ পানির স্তর বৃদ্ধি করে ।

২। ভূমির লবণাক্ততা হ্রাস করে পরিবেশ জীবকুলের বাস উপযোগী করতে সাহায্য করে ।

৩। পরিবেশের অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের ভারসাম্য বজায় রাখে, উত্তাপ সৃষ্টি রোধ করে এবং বাতাস পরিশোধন করে ।

৪। উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী উপকূলীয় অঞ্চলে সৃষ্ট সামুদ্রিক ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও সাইক্লোনের কবল থেকে মানুষ ও জীব জন্তুকে রক্ষা করে ।

৫। ভূমিধ্বস, বালিয়াড়ি ও ঝড়রোধ করে এবং বৃষ্টিপাত হতে সহায়তা করে ।

৬। এ বনাঞ্চল মানুষ, পাখি, জীবজন্তু ও পোকামাকড়ের নিরাপদ আবাস তৈরি ও রক্ষা করে এবং খাদ্যের যোগান দেয় । ফলে অত্র এলাকার পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় থাকে ।

৭। উপকূলীয় বনায়ন আমাদের মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ সুন্দরবন ও এর জীবজন্তুকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । পৃথিবী বিখ্যাত ম্যানগ্রোভ বন হিসাবে খ্যাত এ সুন্দরবনকে রক্ষা করতে উপকূলীয় সাভানা বেষ্টনী সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই ।

শহীদ মিনার-জাতীয় পতাকা ও স্মৃতিসৌধ অংকন পদ্ধতি

দেবদারু গাছের নান্দনিক উপযোগিতা

উপকূলীয় বনায়নের ফলে যে নির্মল সবুজ বেষ্টনী তৈরি হয় তার নান্দনিক সৌন্দর্য অভূতপূর্ব। এ সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে দেশ-বিদেশের বহু ভ্রমণ বিলাসী মানুষের সমাগম ঘটে। হরেক রকম পশুপাখির আবাসস্থল তৈরি হয় যা পরিবেশের অসীম উপকার সাধন করে এবং নান্দনিকতায় নবতর সংযোজন ঘটায় ।

দেবদারু গাছের অর্থনৈতিক উপযোগিতা

উপকূলীয় বনাঞ্চলে বৃক্ষরাজির অর্থনৈতিক উপযোগিতা অপরিসীম। এ বনাঞ্চলে ভ্রমণকারী দেশ-বিদেশের পর্যটকদের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের পথ সম্প্রসারিত হয় । যার ফলে জাতীয় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসে।

· ফলজ উদ্ভিদ যেমন- নারিকেল, খেজুর, তাল, কলা, আম প্রভৃতি থেকে উৎপাদিত ফসল উপকূলীয় মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে এবং অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটায় ।

বনাঞ্চলে উৎপাদিত মধু ও মোম থেকে অর্থ উপার্জিত হয়। ফুল, ফল ও পল্লবগুচ্ছ থেকে খাদ্যশস্য, শাকসবজি, পাখির খাদ্য, পশুখাদ্য পাওয়া যায় ।

উদ্ভিদরাজির কাণ্ড ও শাখা থেকে জ্বালানি কাঠ, খুঁটি, আসবাবপত্র, ঘরবাড়ি, যানবাহন, কৃষি উপকরণ, রেলওয়ে স্লিপার ইত্যাদি পাওয়া যায় ।

Samim Ahmed

Hey! I'm Samim Ahmed (Admin of ShikhiBD). I love to write and read on the topic of current affairs. Since my childhood; I have been an expert in writing feature posts for various magazines.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *