বাচ্য কাকে বলে ? বাচ্য কত প্রকার ? বাচ্য পরিবর্তন
বাচ্য কাকে বলে : আজকের পাঠে আমরা বাচ্যের সংজ্ঞা, বাচ্যের প্রকারভেদ ও বাচ্য পরিবর্তন সম্পর্কে জানবো । প্রথমেই আমরা জেনে নিই বাচ্য কাকে বলে ।
বাচ্য কাকে বলে
বাক্যের প্রকাশভঙ্গিকে বাচ্য বলে। বাক্যের মধ্যে ক্রিয়ার ভূমিকা বদলে গিয়ে একই বক্তব্যের প্রকাশভঙ্গি আলাদা হয়ে যায়। ক্রিয়া কখনো কর্তাকে অনুসরণ করে, ক্রিয়া কখনো কর্মকে অনুসরণ করে, আবার ক্রিয়াই কখনো বাক্যের মধ্যে মুখ্য হয়ে ওঠে। যেমন –
সে বাজারে যায়।
সাহসী ছেলেটিকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
কোথায় যাওয়া হচ্ছে?
উপরের প্রথম বাক্যে ‘যায়’ ক্রিয়াটি ‘সে’ কর্তার অনুসারী। দ্বিতীয় বাক্যে ‘করা হয়েছে’ ক্রিয়াটি ‘সাহসী ছেলেটিকে’ কর্মের অনুসারী। তৃতীয় বাক্যে ‘যাওয়া হচ্ছে ক্রিয়াই মুখ্য।

বাচ্য কাকে বলে ? বাচ্য কত প্রকার ? বাচ্য পরিবর্তন
বাচ্য কত প্রকার
প্রকাশভঙ্গির এই ভিন্নতা অনুযায়ী বাচ্য তিন প্রকার: কর্তাবাচ্য, কর্মবাচ্য ও ভাববাচ্য।
১. কর্তাবাচ্য
যে বাক্যের ক্রিয়া কর্তাকে অনুসরণ করে, তাকে কর্তাবাচ্য বলে। এক্ষেত্রে ক্রিয়ার রূপটি কর্তার পক্ষ অনুযায়ী হয়। যেমন-
ঝরনা ছবি আঁকে।
আমি আগামীকাল বাড়ি ফিরব।
অজীব বিশেষ্যও অনেক সময়ে কর্তার ভূমিকা গ্রহণ করে। যেমন –
ফ্যানটা অনেক জোরে ঘুরছে।
শরতে শিউলি ফোটে।
২. কর্মবাচ্য
যে বাক্যের ক্রিয়া কর্মকে অনুসরণ করে, তাকে কর্মবাচ্য বলে। যেমন –
পুলিশ কর্তৃক ডাকাত ধৃত হয়েছে।
চিঠিটা পড়া হয়েছে।
ঔষধি গাছের উপকারিতা ও ছবিসহ পরিচিতি
৩. ভাববাচ্য
যে বাক্যের ক্রিয়া-বিশেষ্য বাক্যের ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে ভাববাচ্য বলে। যেমন-
আমার যাওয়া হলো না।
কোথা থেকে আসা হলো ।
এখানে ‘যাওয়া’, ‘আসা’ – এগুলো হলো ক্রিয়া-বিশেষ্য।
রংপুর বিভাগের জেলা ও উপজেলা সমূহ
বাচ্য পরিবর্তন
বাচ্য পরিবর্তনের কয়েকটি উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো:
১. কর্তাবাচ্য থেকে কর্মবাচ্য
কর্তাবাচ্যের বাক্যকে কর্মবাচ্যে পরিবর্তিত করতে হলে কর্তার সঙ্গে দ্বারা, দিয়ে, কর্তৃক ইত্যাদি অনুসর্গ যোগ
করতে হয় এবং ক্রিয়ারূপকে কর্মের অনুসারী করতে হয়। যেমন –
কর্তাবাচ্য: জাহানারা ইমাম একাত্তরের দিনগুলি রচনা করেছেন।
কর্মবাচ্য: জাহানারা ইমাম কর্তৃক একাত্তরের দিনগুলি রচিত হয়েছে।
কর্তাবাচ্য: তারা বাড়িটি তৈরি করেছে।
কর্মবাচ্য: তাদের দ্বারা বাড়িটি তৈরি হয়েছে।
আগ্নেয়গিরি কি- আগ্নেয়গিরি কাকে বলে ? ছবিসহ বিশ্বের জীবন্ত ১০টি আগ্নেয়গিরি
২. কর্মবাচ্য থেকে কর্তাবাচ্য
কর্মবাচ্যের বাক্যকে কর্তাবাচ্যে রূপান্তরিত করতে হলে কর্তার সঙ্গে যুক্ত দ্বারা, দিয়ে, কর্তৃক প্রভৃতি অনুসর্গ বাদ দিতে হয় এবং ক্রিয়াকে কর্তার অনুসারী করতে হয়। যেমন –
কর্মবাচ্য: প্রধান শিক্ষক কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়েছে। কর্তাবাচ্য: প্রধান শিক্ষক জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন। কর্মবাচ্য: আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।
কর্তাবাচ্য: আমরা কঠোর পরিশ্রম করি।
৩. কর্তাবাচ্য থেকে ভাববাচ্য
কর্তাবাচ্যের বাক্যকে ভাববাচ্যে রূপান্তরিত করতে হলে একটি ক্রিয়াবিশেষ্যকে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় নিয়ে আসতে হয়। যেমন –
কর্তাবাচ্য: তুমি কখন এলে?
ভাববাচ্য: কখন আসা হলো?
কর্তাবাচ্য: ওখানে কেন গেলে?
ভাববাচ্য: ওখানে কেন যাওয়া হলো?
যাকাত শব্দের অর্থ কি। যাকাতের খাত কয়টি। যাকাতের নিসাব কি বিস্তারিত জানুন ।
৪. ভাববাচ্য থেকে কর্তাবাচ্য
ভাববাচ্যের বাক্যকে কর্তাবাচ্যে রূপান্তরিত করতে হলে ক্রিয়াকে কর্তার অনুসারী করতে হয়। যেমন –
ভাববাচ্য: একটু বাইরে বেড়িয়ে আসা যাক। কর্তাবাচ্য: একটু বাইরে বেড়িয়ে আসি।
ভাববাচ্য: এবার বাঁশিটি বাজানো হোক। কর্তাবাচ্য: এবার বাঁশিটি বাজাও।
উইকিপিডিয়া থেকেও বাচ্য সম্পর্কে জানতে পারেন । পোস্টটি সম্পর্কে আপনাদের মূল্যবান মতামত কমেন্টবক্সে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ ।



