ব্রণ দূর করার উপায়
ব্রণ দূর করার উপায় : ব্রণ একটি অস্বস্তিকর চর্ম রোগ। সাধারণত বয়ঃসন্ধিকাল থেকে কারো কারো মুখে ব্রণ দেখা দিতে শুরু করে। আর অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ব্রণের চিকৎসা করানোর পরও ব্রণ ওঠা বন্ধ হয় না। ফলে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েন। তবে কিছু ঘরোয়া ব্যবস্থা রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করলে আপনি ব্রণ থেকে বেঁচে যেতে পারেন।

ব্রণ কী ?
ব্রণ হচ্ছে হরমোন ও অ্যান্ড্রোজেন দ্বারা সৃষ্ট চামড়ার নিচে জমাটবদ্ধ মেদ হতে ক্ষরিত রস দ্বারা গঠিত এক ধরনের ফোঁড়াবিশেষ।
ব্রণ কেন হয়
সাধারণত বয়ঃসন্ধি, গর্ভাবস্থা এবং মাসিক চক্রের সময় ত্বকে ব্রণ দেখা দেয়। তবে অন্যান্য কিছু কারণেও ব্রণ দেখা দিতে পারে যেমন –
- অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার দুগ্ধজাত খাবার, অ্যালকোহল গ্রহণ করা।
- খুব জোরে ত্বক ঘষা, মোটা টুপি, হেলমেট বা সবসময় ত্বকের সাথে লেগে আদ্রতা তৈরি করে এমন কিছু পরিধান করা।
- অতিরিক্ত ভারী মেকাপ, তৈলাক্ত প্রসাধনী, কিছু কিছু ওষুধ গ্রহণ করা ।
ব্রণ দূর করার উপায়
আজকে আমরা ব্রণ থেকে বাঁচার কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। যদি আপনি ব্রণে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায় :
ব্রণের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ ফলাফল পাবার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকৎসকগণ নিম্নের পরামর্শগুলো প্রদান করেছেন –
১। আপনার ত্বক পরিষ্কার রাখুন : প্রতিদিন অন্তত দু’বার এবং যদি ঘাম হয় তাহলে ঘামের পর আবারও আলতোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন । হালকা মাত্রার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে পারেন। ফেসওয়াশ ব্যবহারের জন্য আলাদা কোনো ওয়াশক্লথ, স্পঞ্জ বা অন্য কোনো সরঞ্জাম ব্যবহার না করে বরং হাতের আঙুলের অগ্রভাগ দিয়ে আলোতো করে ফেসওয়াশ মাখুন।
হালকা উষ্ণ পানি ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন হালকা উষ্ণ পানি। কোনোভাবেই অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করবেন না ।
২। সঠিক প্রসাধনী বাছাই করুনঃ ত্বকের যত্নে এ্যালকোহল যুক্ত কোনো প্রসাধনী একদম ব্যবহার করা যাবে না। তাই প্রসাধনীর গায়ে ;এ্যালকোহল মুক্ত’ কথাটি লেখা আছে কিনা তা অবশ্যই দেখে কিনবেন । এর সাথে সাথে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট, টোনার, এক্সফয়োলিন্ট নামক উপাদান থাকলে সেসব প্রসাধনীও এড়িয়ে চলুন। কারণ এই উপাদানগুলো ত্বককে শুষ্ক করে এবং ব্রণকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।
৬ মাস বাচ্চার খাবার তালিকা কি হওয়া উচিত? জানুন
৩। নিয়মিত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন : আপনার চুল থেকে তেলের সংষ্পর্শে আপনার কপালে ব্রণ সৃষ্টি হতে পারে। তাই নিয়মিত চুলে শ্যাম্পু করুন এবং আপনার চুলকে আপনার মুখ থেকে দূরে রাখুন ।
৪। ত্বকের পর্যবেক্ষণ করুনঃ ত্বকের চিকিৎসা বা যত্ন করার সাথে সাথে আপনার ত্বকের অবস্থার উপর দৃষ্টি রাখুন। ব্রণ কমছে নাকি বাড়ছে সেটা লক্ষ্য করুন। তবে মনে রাখতে হবে ব্রণের চিকিতসার জন্য কয়েক সপ্তাহ এমনকি মাস পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
৫। মুখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকুন : ব্রণ হলে সাধারণত মুখে অস্বস্তি লাগে, এমনকি হালকা চুলকাতেও পারে। তাই ব্রণ হলে মুখে হাত দেয়া, চুলকানে, ফুসকুড়ি চেপে দিতে ইচ্ছা হয়। তবে এমনটি করলে আপনার ব্রণের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। এমনকি পোস্ট-ইনফ্ল্যামেটরি হাইপারপিগমেন্টেশন নামক দাঁগ বা কালো দাঁগ হবার ঝুকিও বেড়ে যাবে।
হযরত সালমান ফারসির ইসলাম গ্রহণ এর কাহিনী
৬। সরাসরি রোদ থেকে দূরে থাকুন : ব্রণ হলে সরাসরি রোদ থেকে দূরে থাকুন । কারণ সরাসরি রোদ প্রথমতঃ আপনার ত্বকে ব্রণ সৃষ্টির কারণ হতে পারে আর দ্বিতীয়তঃ আপনার ব্যহৃত কিছু প্রসাধনীর মধ্যে এমন উপাদানও থাকতে পারে যা রোদের তাপের কারণে আপনার ত্বকের উপর মারাত্মক প্রভাব তৈরি করবে। ফলে আপনার ব্যবহার করা যে প্রসাধনী ব্রণ সারাতে সাহায্য করছিল , রোদের তীব্র তাপের প্রভাবে সে তখন আপনার ব্রণ বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।
৭। চা গাছের তেল : চা গাছের তেল ব্যবহার করে অনেকেই ব্রণের চিকিৎসায় অনেকাংশে সুফল পেয়েছেন। তাই আপনার ত্বকে পরীক্ষামূলকভাবে চা গাছের তেল ব্যবহার করে দেখতে পারেন ।
৮। নির্দিষ্ট কিছু খাবার এড়িয়ে চলুন : অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, দুগ্ধজাত খাবার, অ্যালকোহল ত্বকে ব্রণের অন্যতম কারণ হতে পারে। তাই এসব থেকে এড়িয়ে চলুন ।
মনে রাখবেন, ব্রণ সারতে সময় লাগে। তাই ধৈর্য্য সহকারে নিবিড়ভাবে ব্রণের চিকিৎসা করুন। এই টিপস্গুলো অনুসরণের পরও যদি আপনি দেখেন যে ব্রণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে, তাহলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ভালো কোনো ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হোন ।




