সুস্বাস্থ্যলেখাপড়া

মিষ্টি কুমড়া চাষ পদ্ধতি । মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা

মিষ্টি কুমড়া চাষ পদ্ধতি । মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা : কুমড়া অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সবজি। এ জাতীয় সবজির কিছু গ্রীষ্মকালীন ও কিছু শীতকালীন জাত আছে যা বাংলাদেশে জন্মায় । আবার কিছু জাত আছে সারা বছরই সংরক্ষণ করে সবজির চাহিদা পূরণ করা যায় । কুমড়া জাতীয় সবজির মধ্যে মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া ও লাউ প্রধান । আমরা এখন মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া ও লাউ সবজিগুলো সম্পর্কে জানব ।

মিষ্টিকুমড়ার ছবি
মিষ্টিকুমড়ার ছবি

মিষ্টি কুমড়া চাষ পদ্ধতি । মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা

মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা

মিষ্টি কুমড়ার চাষ পদ্ধতি জানার পূর্বে আমরা মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিই । মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ থাকে । এর ফল কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থায়ই খাওয়া যায়। তবে এর প্রধান ব্যবহার পাকা অবস্থায় । কুমড়ার পাতা ও কচি ডগা খাওয়া যায়। মিষ্টিকুমড়া সচরাচর বৈশাখী, বর্ষাতি ও মাঘী এ তিন শ্রেণিতে বিভক্ত ।

মিষ্টি কুমড়ার ১০টি বিশেষ উপকারিতা

১. ভিটামিন এ, সি, ফাইবার ও পটাসিয়াম সমৃদ্ধ মিষ্টি কুমড়া খেলে বাড়ে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা৷
২. প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে হজমে সহায়ক সবজিটি। নিয়মিত এটি খেলে তাই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে থাকা যায়।
৩. মিষ্টি কুমড়ায় এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এটি বেশ কিছু মারাত্মক রোগ যেমন ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ থেকে দূরে রাখে।
৪. মিষ্টি কুমড়ায় থাকা ভিটামিন এ ত্বকের যত্নে অনন্য। নিয়মিত এই সবজি খেলে ত্বক থাকে কোমল ও মসৃণ।
৫. ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায় মিষ্টি কুমড়া থেকে। এই উপাদান স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
৬. কার্বোহাইড্রেট, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও আয়রন মেলে মিষ্টি কুমড়া থেকে৷ এসব উপাদান শরীরে শক্তি ও পুষ্টি জোগায়।
৭. কম ক্যালোরি ও উচ্চ ফাইবার সম্পন্ন হওয়ায় মিষ্টি কুমড়া ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৮. পটাসিয়ামের উৎস এই সবজি নিয়মিত খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে দূরে থাকা যায় কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ থেকে।
৯. এতে থাকা বেটা ক্যারোটিন, ফাইবার ও ভিটামিন সি শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে৷ ফলে লিভার ভালো থাকে।
১০. রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেলে।

জানাজার নামাজের নিয়ম ও দোয়া (অর্থ ও উচ্চারণসহ)

মিষ্টি কুমড়া চাষের উপযুক্ত সময়

বৈশাখী কুমড়ার বীজ মাঘ মাস, বর্ষাতি কুমড়ার বীজ বৈশাখ এবং মাঘী কুমড়ার বীজ শ্রাবণ মাসে বপন করতে হয়।

মাদা তৈরি ও সার প্রয়োগ

মাদার জন্য সাধারণত ৩-৪ মিটার দূরত্বে ৮০-১০০ ঘন সেমি আকারের গর্ত তৈরি করতে হবে । প্রতি গর্তে গোবর বা কমপোস্ট ৫ কেজি, ইউরিয়া ১৩০ গ্রাম, টিএসপি ২০০ গ্রাম, এমওপি ১৫০ গ্রাম, জিপসাম ৯০ গ্রাম ও দস্তা সার ৫ গ্রাম দিতে হবে। ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সার বীজ বোনার ৮-১০ দিন আগে গর্তের মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া দুইভাগে বীজ বোনার ১০ দিন পর প্রথমবার ও ৩৫ দিন পর দ্বিতীয়বার উপরি প্রয়োগ করতে হবে । মাদার চারপাশে অগভীর একটি নালা কেটে সার নালার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।

বীজ বপন

মাদা তৈরি হতে ১০-১২ দিন পর প্রতি মাদায় ২-৩ টি বীজ মাদার মাঝখানে রোপণ করতে হবে।

আগ্নেয়গিরি কি- আগ্নেয়গিরি কাকে বলে ? বিশ্বের জীবন্ত ১০টি আগ্নেয়গিরি

মিষ্টি কুমড়া গাছের পরিচর্যা

আগাছা থাকলে তা পরিষ্কার করে চারা গাছের গোড়ায় কিছুটা মাটি তুলে দিতে হবে । মাঝে মাঝে নিড়ানি দিয়ে গাছের গোড়ার মাটি আলগা করে দিতে হবে। গোড়ার কাছাকাছি কিছু খড় ১৫-২০ দিন পর বিছিয়ে দিতে হবে । ফল ধরা শুরু করলে ফলের নিচেও খড় বিছিয়ে দিতে হবে। বৈশাখী কুমড়া মাটিতে হয়, অন্যান্য কুমড়ার জন্য মাচার ব্যবস্থা করতে হয় । গাছের লতাপাতা বেশি হলে কিছু লতাপাতা ছেঁটে দিতে হবে ।

পোকা ও রোগ দমন

কুমড়া জাতীয় গাছের বিভিন্ন পোকার মধ্যে লাল পোকা, কাঁটালে পোকা এবং ফলের মাছি উল্লেখযোগ্য । এ পোকা দমনের জন্য সেভিন ডায়াজিনন প্রয়োগ করা যেতে পারে। আর এ জাতীয় সবজির রোগের মধ্যে পাউডারি মিলডিও, ডাউনি মিলডিও ও এনথ্রাকনোজ প্রধান। দুই সপ্তাহ পর পর ডায়াথেন এম ৪৫ প্রয়োগ করতে হবে ।

ফসল সংগ্রহ ও ফলন

মিষ্টিকুমড়া কচি অবস্থা থেকে শুরু করে পরিপূর্ণ পাকা অবস্থায় খাওয়া যায় । তাই কচি অবস্থা থেকেই ফসল সংগ্রহ শুরু হয় । কুমড়া বেশ পাকিয়ে সংগ্রহ করলে অনেকদিন ঘরে রাখা যায় । শতক প্রতি ফলন ৮০-১০০ কেজি হতে পারে।

মিষ্টি কুমড়ার চাষ পদ্ধতি ও মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা সম্বন্ধে আরও জানতে পারেন উইকিপিডিয়া থেকে ।

Samim Ahmed

Hey! I'm Samim Ahmed (Admin of ShikhiBD). I love to write and read on the topic of current affairs. Since my childhood; I have been an expert in writing feature posts for various magazines.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *