লাউ চাষ পদ্ধতি – পরিচর্যা । লাউ এর উপকারিতা
লাউ চাষ পদ্ধতি – পরিচর্যা । লাউ এর উপকারিতা : বাংলাদেশে লাউ একটি জনপ্রিয় সবজি। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় সারাবছরই লাউ পাওয়া যায়। লাউ পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি সবজি তবে লাউয়ের চেয়ে এর শাক আরও বেশি পুষ্টিকর ।
লাউ চাষ পদ্ধতি – পরিচর্যা । লাউ এর উপকারিতা
লাউ এর উপকারিতা
লাউ চাষ পদ্ধতি জানার আগে আমরা জেনে নেবো লাউয়ের উপকারিতা কী কী । লাউ পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি সবজি। লাউয়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, বি এবং ডি রয়েছে । এছাড়া লাউ হচ্ছে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ফোলেট, আয়রন এবং পটাশিয়ামের চমৎকার উৎস। লাউয়ের বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে ।
১. লাউয়ের ৯৬ শতাংশই পানি ৷ ফলে নিয়মিত লাউ খেলে আমাদের শরীর হাইড্রেট থাকে।
২. লো ক্যালোরি এবং উচ্চমাত্রার আঁশ মেলে এতে। ফলে যারা ওজন কমানোর কথা ভাবছেন তারা নিশ্চিন্তে খেতে পারেন লাউ।
৩. কোষ্ঠকাঠিন্য, অর্শ, পেট ফাঁপা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে সবজিটি।
৪. কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় নিয়মিত লাউ খেলে।
৫. লাউ খেলে দূর হয় হজমের সমস্যা।
৬. লাউয়ে থাকা পটাশিয়াম ও ফাইবার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
৭. রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতেও লাউয়ের জুড়ি নেই।
৮. লাউয়ে থাকা ভিটামিন, মিনারেল ও উচ্চমাত্রার পানি আমাদের ত্বক ও চুল সুস্থ রাখে।
৯. ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে লাউয়ে। এই দুই উপাদান শরীরে ঘামজনিত লবণের ঘাটতি দূর করে ৷ পাশাপাশি দাঁত ও হাড়কে মজবুত করে।
১০. কিছু গবেষণা দাবি করছে, রাতে ঘুম হওয়ার সমস্যা দূর করতে লাউয়ের ভূমিকা রয়েছে।
যাকাত শব্দের অর্থ কি। যাকাতের খাত কয়টি। যাকাতের নিসাব কি
লাউয়ের জাত
বাংলাদেশে লাউয়ের অনেক জাত চোখে পড়ে । ফলের আকার-আকৃতি এবং গাছের লতানোর পরিমাণ থেকেও জাতগুলো পাথর্ক্য করা যায় । যাহোক দেশীয় উন্নত এবং গবেষণালব্ধ কিছু জাতের নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
ক) দেশীয় জাত : গাঢ় সবুজ থেকে হালকা সবুজ
খ) উন্নত জাত : বারি লাউ ১, বারি লাউ
গ) হাইব্রিড জাত গোলাকার বা লম্বা হালকা সবুজ
লাউ চাষের মাটি
প্রায় অনেক মাটিতেই লাউ ভালো উৎপাদিত হয় । তবে দোআঁশ মাটিতে লাউয়ের ফলন ভালো হয় । বেলে মাটিতে জৈব পদার্থ যোগ করে প্রয়োজনীয় সেচ দিয়ে সহজে লাউ চাষ করা যায় ।
মহানবীর সিরিয়া সফর ও পাদ্রী বাহীরার কাহিনী
লাউ চাষের উপযুক্ত সময়
লাউয়ের বীজ বপনের উযপুক্ত সময় হচ্ছে আগস্ট থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে।
জমি ভালোভাবে চাষ করে মই দিয়ে ঢেলা ভেঙে সমান করতে হবে। জমিতে মাদার উচ্চতা হবে ১৫-২০ সেমি, প্রস্থ হবে ২.৫ মিটার এবং লম্বা জমির সুবিধামতো নিতে হবে । এভাবে পর পর মাদা তৈরি করতে হবে। এরূপ পাশাপাশি দুইটি মাদার মাঝখানে ৬০সেমি প্রশস্ত সেচ ও নিকাশ নালা থাকবে ।প্রতি মাদায় ৪-৫টি বীজ বপন করতে হবে । ৪-৫ দিনের মধ্যেই বীজ অঙ্কুরিত হবে ।
বাউনি ও মাচা তৈরি
লাউ গাছ যখন ১৫-২০ সেন্টিমিটার বড় হয় তখন গাছের গোড়ার পাশে বাঁশের ডগা কঞ্চিসহ মাটিতে পুঁতে দিতে হয় ।
লাউ গাছের পরিচর্যা
চারা একটু বড় হলে প্রতি মাদায় ২টি করে চারা রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলতে হবে । মাটি নিড়ানি দিয়ে আলগা করে ঝুরঝুরা করতে হবে। প্রতিদিন লাউগাছে প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি দিতে হবে ।
বালাই ব্যবস্থাপনা
এ সবজিতে রেড পামকিন বিটল পোকার আক্রমণ হতে পারে। এ পোকা দেখা দেওয়ার সাথে সাথে ধরে মেরে ফেলতে হবে । এছাড়া কিছু প্রজাতির ঘাসের মাধ্যমে লাউয়ের ‘মোজাইক ভাইরাস’ রোগ হতে পারে ।
ফসল সংগ্ৰহ
ফল তোলা বা সংগ্রহ করার উপযুক্ত পর্যায় হবে যখন-
• ফলের গায়ে প্রচুর শুং এর উপস্থিতি থাকবে ।
· ফলের গায়ে নখ দিয়ে চাপ দিলে খুব সহজেই নখ ডেবে যাবে ।
. পরাগায়ণের ১২-১৫ দিন পর ফল সংগ্রহের উপযোগী হয় ।
ফলন
বারি লাউ-১ এবং বারি লাউ-২ চাষ করলে যথাক্রমে হেক্টর প্রতি ৩৫-৪৫ টন (১৪০-১৮০ কেজি/শতক) পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায় ।
লাউ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পারেন উইকিপিডিয়া থেকেও ।