পদার্থ কি? পদার্থ কাকে বলে? পদার্থের বৈশিষ্ট্য। পদার্থ বিজ্ঞান । পদার্থ বিজ্ঞানের জনক কে?
পদার্থ কি? পদার্থ কাকে বলে? পদার্থের বৈশিষ্ট্য। পদার্থ বিজ্ঞান । পদার্থ বিজ্ঞানের জনক কে? : পৃথিবীর প্রতিটা বস্তুই কোনো না কোনো পদার্থ দিয়ে গঠিত। আমাদের চারপাশে নানা বস্তু রয়েছে। যেমন – বই, খাতা, চেয়ার-টেবিল, গাছপালা, পাহা-পর্বত, নদী-নালা ইত্যাদি। এই সবই পদার্থ। এমনকি যে বায়ু আমরা দেখতে পারি না, সেই বায়ুও একটি পদার্থ। পদার্থের আকার, আকৃতি, ওজন ইত্যাদি রয়েছে। আজকের পোস্টে আমরা পদার্থ বিজ্ঞান এর নানান বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
পদার্থ কি? পদার্থ কাকে বলে? পদার্থের বৈশিষ্ট্য। পদার্থ বিজ্ঞান । পদার্থ বিজ্ঞানের জনক কে?
পদার্থ কি
খালি চোখে দেখা যায় না, এমন সুক্ষ্ম কণা দিয়ে পদার্থ গঠিত। পদার্থের এই সুক্ষ্ম কণাকে পরমাণু বলে। দুই বা ততোধিক পরমাণু একত্রিত হয়ে অণু গঠিত হয়। পদার্থ হলো অসংখ্য অণুর সমষ্টি।
পদার্থ কাকে বলে
যার ভর ও আয়তন আছে, জায়গা দখল কর এবং চাপ প্রয়োগে বাধা প্রদান করে তাকে পদার্থ বলে। যেমন: মাটি, পানি, বায়ু ইত্যাদি।
পদার্থের অবস্থা
পদার্থ তিনটি অবস্থায় থাকে – কঠিন, তরল এবং বায়বীয় । পদার্থ কঠিন, তরল না বায়বীয় অবস্থায় থাকবে তা নির্ভর করে পদার্থের অণুগুলো কীভাবে সাজানো, এদের বন্ধন কেমন তার উপরে। পানি একটি পদার্থ। পানির তিনটি অবস্থা রয়েছে । যেমন— বরফ, পানি এবং জলীয় বাষ্প। পানি অসংখ্য পানির অণু দ্বারা গঠিত। এই অণুসমূহ সবসময়ই গতিশীল। কঠিন পদার্থ যেমন— বরফে পানির অণুসমূহ খুব কাছাকাছি থাকে এবং তাদের বন্ধন অনেক বেশি দৃঢ়। তরল পদার্থ যেমন— পানিতে পানির অণুসমূহ যথেষ্ট কাছাকাছি থাকলেও তাদের চলাচল করার জন্য অণুগুলোর মাঝে অল্প কিছু খালি জায়গা থাকে।
আবার বায়বীয় পদার্থ যেমন— জলীয় বাষ্পে পানির অণুসমূহ একে অপর থেকে বেশ দূরে অবস্থান করে। বায়বীয় পদার্থের অণুগুলোর মাঝে অনেক বেশি খালি জায়গা থাকে। ফলে অণুগুলো দ্রুতগতিতে সর্বক্ষণ স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারে।
পদার্থের বৈশিষ্ট্য
পদার্থের গঠন ও অবস্থার উপর ভিত্তি করে প্রতিটি পদার্থের ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য থাকে। তবে সকল পদার্থেরই কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য থাকে। যেমন-
১। পদার্থের ওজন আছে।
২। পদার্থের আয়তন আছে।
৩। পদার্থ জায়গা দখল করে।
৪। পদার্থ কঠিন, তরল ও বায়বীয় এই তিন অবস্থায় থাকে।
৫। পদার্থ ভাঙলে তার মৌলিক কিংবা যৌগিক গঠন দেখতে পাওয়া যায়।
চুল পড়ার কারণ । চুল পড়া বন্ধ করার ঘরোয়া উপায় জেনে নিন
পদার্থ বিজ্ঞান কাকে বলে
পদার্থবিজ্ঞানের ইংরেজি প্রতিশব্দ Physics শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ ‘ফুসিকে’ ‘Fusiky’ শব্দ থেকে যার অর্থ ‘প্রকৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান’। বিজ্ঞানের যে শাখায় পদার্থ ও শক্তির মিথস্ক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে পদার্থবিজ্ঞান বলে্ ।
পদার্থ বিজ্ঞানের জনক কে
পদার্থ বিজ্ঞানের ক্রমবিকাশে অবদান রয়েছে অসংখ্য পদার্থবিজ্ঞানীর । ঐতিহাসিক মতে, পদার্থবিজ্ঞানের জনক ছিলেন স্যার আইজ্যাক নিউটন। তবে অনেকেই বিজ্ঞানী গ্যালিলিওকে পদার্থবিজ্ঞানের জনক বলে থাকে।
তবে আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের জনক বলা হয় আলবার্ট আইনস্টাইনকে । আলবার্ট আইনস্টাইন আপেক্ষিকতার তত্ত্ব এবং বিশেষত ভর-শক্তি সমতুল্যতার সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন।
ব্যাডমিন্টন কোর্টের মাপ । ব্যাডমিন্টন খেলার নিয়ম বিস্তারিত
পদার্থ কত প্রকার ও কী কী
গঠনভেদে পদার্থ দুই প্রকারঃ ১। মৌলিক পদার্থ ২। যৌগিক পদার্থ।
১। মৌলিক পদার্থ কাকে বলে : যে পদার্থকে বিশ্লেষণ বা বিভাজন করলে ঐ পদার্থ ছাড়া আর কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না, তাকে মৌলিক পদার্থ বলে। অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন ইত্যাদি হচ্ছে মৌলিক পদার্থ ।
২ । যৌগিক পদার্থ কাকে বলে : যে পদার্থকে বিশ্লেষণ বা বিভাজন করলে ঐ পদার্থ ছাড়াও অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না, তাকে যৌগিক পদার্থ বলে। পানি কার্বন ডাইঅক্সাইড ইত্যাদি।
অবস্থাভেদে পদার্থ চার প্রকার : ১। কঠিন পদার্থ ২। তরল পদার্থ ৩। বায়বীয় পদার্থ এবং ৪। প্লাজমা পদার্থ
১। কঠিন পদার্থ : যে পদার্থের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন আছে এবং অণু-পরমাণু গুলো খুব ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত থাকে তাকে কঠিন পদার্থ বলে। যেমন- ইট, পাথর, লোহা ইত্যাদি।
২। তরল পদার্থ : যে পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন আছে, কিন্তু আকার নেই এবং ঐ পদার্থের অণু-পরমাণুগুলো একে অপরের সাথে কিছূটা দূরত্ব বজায় রাখে, তাকে তরল পদার্থ বলে। যেমন- পানি, দুধ, তেল ইত্যাদি।
৩। যে পদার্থের নির্দিষ্ট আকার, আয়তন নেই এবং ঐ পদার্থের অণু-পরমাণুগুলো একে অপরের সাথে অনেক দূরত্ব বজায় রাখে, তাকে বায়বীয় পদার্থ বলে। যেমন- বাতাস, জলীয় বাষ্প ইত্যাদি।
৪। প্লাজমা : পদার্থের যে গ্যাসীয় অবস্থায় সমান সংখ্যক ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়ন বহন করে আয়নিত হয়, তাকে প্লাজমা বলে। বজ্রপাত, নিয়ন গ্যাস দিয়ে তৈরি রাসায়নিক যৌগ প্লাজমার উদাহরণ।
পোস্টটি সম্পর্কে আপনাদের মূল্যবান মতামত কমেন্টবক্সে জানান । ধন্যবাদ।