ইসলামিক পোস্ট

জানাজার নামাজের নিয়ম ও দোয়া (অর্থ ও উচ্চারণসহ)

জানাজার নামাজের নিয়ম ও দোয়া (অর্থ ও উচ্চারণসহ) : জানাজার নামাজ হচ্ছে ফরজে কিফায়। এই নামাজ অনেক বেশি ফজিলতপূর্ণ। মূলত এই নামাজ পড়া হয় মৃত ব্যক্তির সওয়াবের জন্য। তবে এই নামাজ পড়ার দ্বারা মৃত ব্যক্তির উপকারের সাথেসাথে নামাজী ব্যক্তিরাও অফুরন্ত সওয়াব পেয়ে থাকেন।

[ জানাজার নামাজ পড়া এলাকাবাসীর জন্য ফরজে কেফায়া। ফরজে কেফায়া বলতে এমন ফরজকে বলা হয়, যা কয়েকজন মিলে আদায় করলে পুরো এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায়। ]

জানাজার নামাজের নিয়ম ও দোয়া (অর্থ ও উচ্চারণসহ)
জানাজার নামাজের নিয়ম ও দোয়া

জানাজার নামাজের নিয়ম ও দোয়া (অর্থ ও উচ্চারণসহ)

জানাজার নামাজের ফজিলত

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ”যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের জানাজার নামাজ পড়া পর্যন্ত উপস্থিত থাকবে, তার জন্য এক কিরাত সওয়াব রয়েছে। আর যে ব্যক্তি দাফন করা পর্যন্ত উপস্থিত থাকবে, তার জন্য দুই কিরাত সওয়াব রয়েছে। জিজ্ঞাসা করা হলো, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.) দুই কিরাতের পরিমাণ কতটুকু ? তিনি বললেন, দুই বড় পাহাড়ের সমান।“ সহীহ বুখারী: ১৩২৪/১৩২৫

জানাজার নামাজের নিয়ম

জানাজার নামাজের বিধান পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের বিধানের মতোই। অর্থাত, জানাজার নামাজের জন্যও শরীর পাক, কাপড় পাক, নামাজের জায়গা পাক, সতর ঢাকা, কিবলামুখী হতে হবে। তবে জানাজার নামাজের জন্য ওয়াক্ত নির্ধারিত নয়। যদি নামাজ ছুটে যাবার আশংকা থাকে তাহলে তায়াম্মুম করে নামাজ পড়ার অনুমতি আছে।

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ – গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

জুতা পায়ে দিয়ে নামাজ পড়া যাবে কিনা ?

জুতার তলায় যদি নাপাক থাকে তাহলে জুতা পায়ে দিয়ে নামাজ পড়া যাবে না। এমন কি জুতা খুলে জুতার উপর দাড়িয়ে নামাজ পড়াও অনুচিত। সাধারণত রাস্তার মাটি, মাঠ পাক থাকে। তাই জুতা খুলে মাটি, ঘাসের উপর নামাজ পড়াই উত্তম।

জানাজার নামাজের ফরজ কয়টি

জানাজার নামাজের ফরজ ২টি। ১। চারবার তাকবির তথা ‘আল্লাহু আকবার’ বলা । ২। দাড়িয়ে নামাজ পড়া। বিনা প্রয়োজনে বসে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না। ‘আল্লাহু আকবার’ বলার ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, কেবল ইমামসাহেব জোরে ‘আল্লাহু আকবার’ বললেই হবে না, প্রত্যেক মুসল্লিরও সামান্য আওয়াজে ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে হবে। নাহলে যে মুসল্লি ‘আল্লাহু আকবার বলবে না, তার নামাজ পূর্ণ হবে না। এছাড়াও অন্যন্য ওয়াজিব সুন্নত অন্য নামাজের মতোই।

জানাজার নামাজের নিয়ম ও দোয়া

জানাজার নামাজের পূর্বে কিবলার দিকে, সকলের সামনে রাখতে হবে। ইমাম সাহেব মাইয়্যেতের সীনা বরাবর দাড়াবেন। মুসল্লিগন তাঁর পেছনে সারিবদ্ধভাবে দাড়াবেন। কাতারের সংখ্যা বেজোড় হতে হবে।

জানাজার নামাজের নিয়ত

মনে রাখতে হবে, জানাজার নামাজের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে মৃত ব্যক্তির জন্য দুআ করা। মূলত জানাজার নামাজের জন্য বিশেষভাবে পাঠ করার মতো কোনো নিয়তের বিধান নেই। তবে মনকে স্থীর করার উদ্দেশ্যে জানাজার নামাজের নিয়ত হিসেবে এভাবে বলা যেতে পারে,”আমি চার তাকবিরের সাথে জানাজার ফরজে কিফায়ার নামাজ এই ইমামের পিছনে এই মাইয়্যেতের দুআর জন্য আল্লাহর ওয়াস্তে আদায় করতেছি।“

১ম তাকবিরঃ

এরপর সামান্য আওয়াজে “আল্লাহু আকবার” বলে দুই হাত বাঁধতে হবে।

এরপর সানা পড়তে হবে।

সানা- “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবার কাসমুকা, ওয়া তাআলা যাদ্দুকা ওয়াজাল্লা ছানাউকা, ওয়া লা-ইলাহা গাইরুকা ওয়া যাল্লা ছানাউকা।

সানার অর্থ-“হে আল্লাহ! আমি আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। আপনি প্রশংসিত, আপনার নাম বরকতময়, আপনার মর্যাদা অতি উচ্চে আর আপনি ব্যতীত কোনো মাবুদ  নেই।

২য় তাকবিরঃ

এরপর নামাজের মধ্যে আমরা যে দুরুদ পড়ি, অর্থাৎ দুরুদে ইবরাহীম পড়তে হবে। দুরুদে ইবরাহীম

‘আল্লাহুম্মা সল্লিয়ালা মুহাম্মাদিউ ওয়া য়ালা আলি মুহাম্মাদ , কামা সল্লাইতা য়ালা ইবরাহীমা ওয়া য়ালা আলি ইরাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।  ‘আল্লাহুম্মা বারিক য়ালা মুহাম্মাদিউ ওয়া য়ালা আলি মুহাম্মাদ , কামা বারাকতা য়ালা ইবরাহীমা ওয়া য়ালা আলি ইরাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।“

অর্থ : হে আল্লাহ ! আপনি মুহাম্মাদ (সা.) এর প্রতি আপনার শান্তি বর্ষণ করুন, এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের প্রতিও ; যেমন শান্তি বর্ষণ করেছিলেন ইবরাহীম (আ.) এর প্রতি এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের প্রতি। হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ (সা.) এর প্রতি আপনার বরকত বর্ষণ করুন, এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের প্রতিও ; যেমন বরকত বর্ষণ করেছিলেন ইবরাহীম (আ.) এর প্রতি এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের প্রতি।“

৩য় তাকবিরঃ

জানাজার নামাজের দোয়া : জানাজার নামাজের দোয়া বাংলা অর্থসহ

‘আল্লাহুম্মাগফির লিহাইয়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গয়িবিনা ওয়া সগীরিনা ওয়া কাবীরিনা ওয়া জাকারিনা ওয়া উংছানা । আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহী য়ালাল ইসলাম ওয়ামাং তাওয়াফফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফফাহু য়ালাল ঈমান।

অর্থ : হে আল্লাহ ! আমাদের মধ্যে জীবিত-মৃত, উপস্থিত-অনুপস্থিত, ছোট-বড় পুরুষ-নারী সকলের গুনাহ ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ্ ! আমাদের জীবিতদের আপনি ইসলামের উপর জীবিত রাখুন এবং আমাদের যাকে মৃত্যু দিবেন, তাকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দান করুন। “

৪র্থ তাকবির:

এরপর চতুর্থ তাকবীর (আল্লাহু আকবার) বলতে হবে । তারপর ডানে ও বামে সালাম ফিরাতে হবে। মনে রাখতে হবে ডানে ও বামে সালাম ফিরানোর সময়ও মুসল্লিদের প্রত্যেককে হালকা আওয়াজে আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ বলতে হবে।

পাইলস এর লক্ষণ । পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়

জানাজার পর মৃত ব্যক্তিকে কাফন খুলে দেখা উচিত নয়। জানাজার পরে যতো দ্রুত সম্ভব কবরে দাফন করতে হবে। জানাজার নামাজই হচ্ছে সর্বোত্তম দুআ। তবে জানাজার নামাজের পরে কিছু সময় অবস্থান করে মনে মনে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করার নির্দেশনা হাদিসে আছে। কিন্তু সকলকে একত্রে ডেকে এনে সম্মিলিতভাবে জোরে জোরে দোয়া করার কোনো বিধান হাদিসে নেই। হাদিস বিশারদগণ এই নিয়মকে বিদাআত বলেছেন।

জানাজার নামাজের নিয়ম ও দোয়া (অর্থ ও উচ্চারণসহ) : পোস্টটি সম্পর্কে আপনাদের মূল্যবান মতামত কমেন্টবক্সে জানাতে পারেন। প্রতিটি মুসলিম এর জানাজার নামাজের নিয়ম – জানাজার নামাজের দোয়া সুন্দরভাবে মুখস্থ রাখা জরুরী । ধন্যবাদ।

Samim Ahmed

Hey! I'm Samim Ahmed (Admin of ShikhiBD). I love to write and read on the topic of current affairs. Since my childhood; I have been an expert in writing feature posts for various magazines.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *