সততার পুরস্কার গল্প
সততার পুরস্কার গল্প : মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ – ছোটবেলায় গল্পটি পড়ে মুগ্ধ হয়নি এমন মানুষ কমই আছে। সততার পুরস্কার গল্প টি একটি শিক্ষনীয় গল্প । আসুন আমরা সততার পুরস্কার গল্পটি আবার পড়ি।
সেকালে ইহুদি বংশে তিনটি লোক ছিল-একজনের সর্বাঙ্গে ধবল, একজনের মাথায় টাক, আরেকজনের দুই চোখ অন্ধ । আল্লাহ্ তাহাদের পরীক্ষার জন্য তাহাদের কাছে এক ফেরেশতা পাঠাইলেন। ফেরেশতা হইলেন আল্লাহর দূত। তাহারা নূরের তৈয়ারী। এমনি কেহ তাঁহাদিগকে দেখিতে পায় না। আল্লাহর হুকুমে তাঁহারা সকল কাজ করিয়া থাকেন ।

ফেরেশতা মানুষের রূপ ধরিয়া প্রথমে ধবলরোগীর নিকটে আসিলেন। তিনি তাহাকে বলিলেন, কী তুমি সবচেয়ে ভালোবাসো ?
ধবলরোগী বলিল, আহা! আমার গায়ের রং যদি ভালো হয়। সকলে যে আমাকে বড় ঘৃণা করে ।
স্বর্গীয় দূত তাহার গায়ে হাত বুলাইয়া দিলেন। তাহার রোগ সারিয়া গেল। তাহার গায়ের চামড়া ভালো হইল । তারপর আল্লাহর দূত পুনরায় তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, এখন তুমি কী চাও ?
সততার পুরস্কার গল্প
সে বলিল, আমি উট চাই ।
দূত তাহাকে একটি গাভিন উট দিয়া বলিলেন, এই লও । ইহাতে তোমার ভাগ্য খুলিবে। তারপর সেই ফেরেশতা টাকওয়ালার কাছে গিয়া বলিলেন, কী তুমি সবচেয়ে ভালোবাসো ?
সে বলিল, আহা! আমার এই রোগ যদি সারিয়া যায়। যদি আমার মাথায় চুল উঠে!
আল্লাহর দূত তাহার মাথায় হাত বুলাইয়া দিলেন। তাহার টাক সারিয়া গেল। তাহার মাথায় চুল গজাইল । দূত পুনরায় বলিলেন, এখন তুমি কী চাও ?
সে বলিল, গাই ।
তিনি তাহাকে একটি গাভিন গাই দিয়া বলিলেন, এই লও । ইহাতে তোমার ভাগ্য খুলিবে । তারপর স্বর্গীয় দূত অন্ধের কাছে গেলেন। গিয়া বলিলেন, কী তুমি সবচেয়ে ভালোবাসো ? সে বলিল, আল্লাহ্ আমার চোখ ভালো করিয়া দিন। আমি যেন লোকের মুখ দেখিতে পাই । স্বর্গীয় দূত তাহার চোখে হাত বুলাইয়া দিলেন। তাহার চোখ ভালো হইয়া গেল । তারপর তিনি তাহাকে বলিলেন, এখন তুমি কী চাও ?
সে বলিল আমি ছাগল চাই ।
হজ কাকে বলে । হজের ফরজ কয়টি । হজের ওয়াজিব কয়টি
স্বর্গীয় দূত তাহাকে একটি গাভিন ছাগল দিয়া বলিলেন, এই লও । ইহাতে তোমার ভাগ্য খুলিবে ।
তারপর উটের বাচ্চা হইল, গাইয়ের বাছুর হইল, ছাগলের ছানা হইল। এই রকম করিয়া উটে, গাইয়ে, ছাগলে তাহাদের মাঠ বোঝাই হইয়া গেল ।
কিছুদিন পর আবার সেই ফেরেশতা পূর্বের মতো মানুষের রূপ ধরিয়া, সেই যে আগের ধবলরোগী ছিল, তাহার নিকট উপস্থিত হইলেন ।
সেখানে গিয়া তিনি বলিলেন, আমি এক বিদেশী। বিদেশে আসিয়া আমার সব পুঁজি ফুরাইয়া গিয়াছে । এখন আল্লাহর দয়া ছাড়া আমার আর দেশে ফিরিবার উপায় নাই। যিনি তোমারে সুন্দর গায়ের রং দিয়াছেন, সুন্দর চামড়া দিয়াছেন, আর এত ধনদৌলত দিয়াছেন, তাঁহার দোহাই দিয়া তোমার কাছে একটি উট চাহিতেছি।
সে বলিল, উটের অনেক দাম, কী করিয়া দিই ?
স্বর্গীয় দূত বলিলেন, ওহে ! আমি যেন তোমাকে চিনিতে পারিতেছি। তুমি না ধবলরোগী ছিলে, আর সকলে তোমাকে ঘৃণা করিত ? তুমি না গরিব ছিলে, পরে আল্লাহ্ তোমাকে ধনদৌলত দিয়াছেন ?
সে বলিল, না, তা কেন ? এসব তো আমার বরাবরই আছে।
স্বৰ্গীয় দূত বলিলেন, আচ্ছা ! যদি তুমি মিথ্যা বলিয়া থাক, তবে তুমি যেমন ছিলে আল্লাহ্ আবার তোমাকে তাহাই করিবেন |
তারপর দূত পূর্বে যে টাকওয়ালা ছিল, তাহার কাছে গেলেন। সেখানে গিয়া আগের মতো একটি গাই চাহিলেন। সেও ধবলরোগীর মতো তাহাকে কিছুই দিল না । তখন দূত বলিলেন, আচ্ছা, যদি তুমি মিথ্যা কথা বলিয়া থাক, তবে যেমন ছিলে আল্লাহ্ তোমাকে আবার তেমনি করিবেন।
এশিয়া মাহাদেশের দেশগুলোর নাম রাজধানী ও মুদ্রা
তারপর দূত পূর্বে যে টাকওয়ালা ছিল, তাহার কাছে গেলেন। সেখানে গিয়া আগের মতো একটি গাই চাহিলেন। সেও ধবলরোগীর মতো তাহাকে কিছুই দিল না । তখন দূত বলিলেন, আচ্ছা, যদি তুমি মিথ্যা কথা বলিয়া থাক, তবে যেমন ছিলে আল্লাহ্ তোমাকে আবার তেমনি করিবেন।
তারপর স্বর্গীয় দূত পূর্বে যে অন্ধ ছিল, তাহার কাছে গিয়া বলিলেন, আমি এক বিদেশি। বিদেশে আমার সম্বল ফুরাইয়া গিয়াছে। এখন আল্লাহর দয়া ছাড়া আমার দেশে পৌঁছিবার আর কোনো উপায় নাই। যিনি তোমার চক্ষু ভালো করিয়া দিয়াছেন, আমি তোমাকে সেই আল্লাহর দোহাই দিয়া একটি ছাগল চাহিতেছি; যেন আমি সেই ছাগল-বেচা টাকা দিয়া দেশে ফিরিয়া যাইতে পারি ।
তখন সে বলিল, হ্যাঁ ঠিক তো। আমি অন্ধ ছিলাম, পরে আল্লাহ্ আমাকে দেখিবার ক্ষমতা দিয়াছেন । আমি গরিব ছিলাম, তিনি আমাকে আমির করিয়াছেন। তুমি যাহা চাও লও। আল্লাহর কসম, আল্লাহর উদ্দেশ্যে যে জিনিস লইতে তোমার মন চায়, তাহা যদি তুমি না লও, তবে আমি তোমাকে কিছুতেই ভালো লোক বলিব না । ফেরেশতা তখন বলিলেন, বাস্। তোমার জিনিস তোমারই থাক। তোমাদের পরীক্ষা লওয়া হইল। আল্লাহ তোমার উপর খুশি হইয়াছেন, আর তাহাদের উপর বেজার হইয়াছেন।
আরও গল্প পড়তে পারেন এখানে
সততার পুরস্কার মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ



