লেখাপড়াসুস্বাস্থ্য

চাল কুমড়া চাষ পদ্ধতি । চাল কুমড়ার পুষ্টিগুণ

চাল কুমড়া চাষ পদ্ধতি । চাল কুমড়ার পুষ্টিগুণ : চাল কুমড়া অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সবজি। এ জাতীয় সবজির কিছু গ্রীষ্মকালীন ও কিছু শীতকালীন জাত আছে যা বাংলাদেশে জন্মায় । আবার কিছু জাত আছে সারা বছরই সংরক্ষণ করে সবজির চাহিদা পূরণ করা যায় । কুমড়া জাতীয় সবজির মধ্যে মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া ও লাউ প্রধান । আমরা এখন মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া ও লাউ সবজিগুলো সম্পর্কে জানব ।

চালকুমড়ার ছবি
চালকুমড়ার ছবি

চাল কুমড়া চাষ পদ্ধতি । চাল কুমড়ার পুষ্টিগুণ

গ্রামবাংলায় ঘরের চালে এ সবজি গাছ উঠানো হয় বলে এটি চাল কুমড়া নামে পরিচিত। তবে জমিতে মাচায় ফলন বেশি হয় । কচি ফল (জালি) তরকারি হিসাবে এবং পরিপক্ব ফল মোরব্বা ও হালুয়া তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

চাল কুমড়ার পুষ্টিগুণ

চাল কুমড়ার চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানার পূর্বে আমরা চাল কুমড়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানবো।

চাল কুমড়ার উপকারিতা

চাল কুমড়া একটি পুষ্টিকর সবজি। এতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেল, শর্করা ও ফাইবার রয়েছে। যক্ষ্মা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাস্ট্রিকসহ বহু রোগের উপশম করে চাল কুমড়া। চাল কুমড়া অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল এজেন্ট হিসেবে পেট ও অন্ত্রের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াদূর করতে সাহায্য করে।

১। মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখেঃ কুমড়া মস্তিষ্কের নার্ভ ঠান্ডা রাখে। তাই কুমড়া মানসিক রোগীদের পথ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চাল কুমড়াকে বলা হয় ব্রেইন ফুড।

২। যক্ষ্মা থেকে মুক্তি :  নিয়মিত চাল কুমড়ার রস খেলে তা শরীরে যক্ষ্মার প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। চাল কুমড়া রক্তপাত বন্ধ করতে সাহায্য করে।

৩। শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমায় : চাল কুমড়া শরীরের অতিরিক্ত ওজন ও মেদ কমাতে ভূমিকা রাখে। তাই যারা ওজন কমাতে চাচ্ছেন তারা নিশ্চিন্তে চাল কুমড়া খেতে পারেন।

৪। চুল ও ত্বকের যত্ন : চাল কুমড়ার রস চুল ও ত্বকে মাখলে চুল চকচকে ও ত্বক সুন্দর হয়।

৫। গ্যাস্ট্রিকের উপশম করে : চাল কুমড়ার বীজ গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তির জন্য খাওয়া হয়।

৬। ফুসফুস ভালো রাখে : চাল কুমড়া এ্যাজমাসহ অন্যান্য ফুসফুস জনিত সমস্যা দূর করে ফুসফুস ভালো রাখে।

চাল কুমড়ার জাত

বাংলাদেশে কুমড়ার কোনো অনুমোদিত জাত নেই । তবে বারি কর্তৃক উদ্ভাবিত বারি চালকুমড়া-১ নামের জাতটি বাংলাদেশের সব অঞ্চলে চাষ করা যায়।

চাল কুমড়া চাষ পদ্ধতি

চাল কুমড়া চাষের মাটি

দোআঁশ মাটিতে এটি চাষ করা হয়। তবে উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কাদা মাটি ছাড়া যে কোনো মাটিতে চাষ করা যায় ।

চাল কুমড়া চাষের উপযুক্ত সময়

চাল কুমড়া চাষের উপযুক্ত সময় হচ্ছে ফেব্রুয়ারি-মে মাস পর্যন্ত ।

মাদা তৈরি

জমি ভালোভাবে চাষ করে ম‍ই দিয়ে ঢেলা ভেঙে সমান করতে হবে। জমিতে মাদার উচ্চতা হবে ১৫-২০ সেমি, প্রস্থ হবে ২.৫ মিটার এবং লম্বা জমির সুবিধামতো নিতে হবে। এভাবে পর পর মাদা তৈরি করতে হবে। এরূপ পাশাপাশি দুইটি মাদার মাঝখানে  ৬০ সে.মি. প্রশস্ত সেচ ও নিকাশ নালা থাকবে। পারিবারিক বাগানে চাল কুমড়ার চাষ করতে হলে মাদায় বোনার পর চারা গজালে তা মাচা, ঘরের চাল কিংবা কোনো গাছের উপর তুলে দেয়া হয় ।

যাকাত শব্দের অর্থ কি। যাকাতের খাত কয়টি। যাকাতের নিসাব কি

মাদায় সার প্রয়োগ

প্রতি মাদায় গোবর ১০ কেজি, টিএসপি ২০০ গ্রাম, এমওপি ৫০ গ্রাম দিতে হবে ।

মাদায় গর্ত তৈরি

মিষ্টিকুমড়া চাষের নিয়মের অনুরূপ । মিষ্টি কুমড়া চাষের নিয়ম জানুন

মাদার গর্ভে বীজ বপন

প্রতি মাদায় সারিতে ৪-৫ টি বীজ বপন করতে হবে। ৫-৭ দিনের মধ্যেই বীজগুলো গজাবে। চারা গজানোর কয়েকদিন পর প্রতি মাদায় ২-৩ টি সবল গাছ রাখতে হবে ।

চাল কুমড়ার পরিচর্যা

মাদা শুকিয়ে গেলে সেচ দিতে হবে। বর্ষার পানি জমলে তা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে । গাছের বৃদ্ধির জন্য মাচা দিতে হবে । মাদার আগাছা পরিষ্কার করতে হবে । গাছের গোড়ায় মাটি উঠিয়ে দিতে হবে ।

বালাই ব্যবস্থাপনা

ফলের মাছি পোকা, রেড পামকিন বিটল, ইপিল্যাকনা বিটল, লাল মাকড় প্রভৃতি পোকা ফলের ক্ষতি করে থাকে । কীটনাশক প্রয়োগ করে এসব পোকা দমন করা যায়। এছাড়া পাউডারি মিলডিও পাতার উপরে সাদা পাউডার এবং ডাউনি মিলডিউ পাতার নিচে ধূসর বেগুনি রং প্রভৃতি রোগ পাতার ক্ষতি করে গাছকে দুর্বল করে ফেলে । ছত্রাক নাশক বা বোর্দো মিক্সার প্রয়োগ করে এসব রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যায় ।

চাল কুমড়া চাষ পদ্ধতি এবং চাল কুমড়ার উপকারিতা জানতে পারেন উইকিপিডিয়া থেকেও । ধন্যবাদ ।

Samim Ahmed

Hey! I'm Samim Ahmed (Admin of ShikhiBD). I love to write and read on the topic of current affairs. Since my childhood; I have been an expert in writing feature posts for various magazines.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *