সুখি পারিবার গঠনের ৭টি টিপস
![সুখি পারিবার গঠনের ৭টি টিপস](https://shikhibd.com/wp-content/uploads/2024/06/সুখী-পরিবার-গঠনে-চম-কিছু-টিপস্-1.png)
![সুখী পরিবার গঠনের ৭টি টিপস](https://shikhibd.com/wp-content/uploads/2024/06/সুখী-পরিবার-গঠনে-চম-কিছু-টিপস্-1.png)
সুখী পরিবার গঠনের ৭টি টিপস
পৃথিবীতে যদি একটি সুখী পরিবার গড়ে তোলা যায়, তাহলে তাকে পৃথিবীর স্বর্গ বললে অত্যুক্তি হবে না। একটি সুখী পরিবারের তুলনা অন্যকিছু দিয়ে হতে পারে না। সুখি পরবার গঠনের উপায় – সহজ কিছু টিপস্ আছে যা মেনে চললে আপনার পরিবার সুখী হতে পারে।
আসুন আমরা কয়েকটি টিপস্ জেনে নিই।
১। পরিবারকে সময় দিন : একজন পুরুষের অন্যতম বড় দায়িত্ব হচ্ছে সংসারের খরচ নির্বাহ করা। অর্থকড়ি এমনি এমনি আসে না। এর জন্য অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। প্রয়োজনের তুলনায় অর্থ কম হলে যেমন সংসারে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়, তেমনি অর্থের আধিক্য সংসারে ব্যপক বিশৃঙ্খলারও জন্ম দিতে পারে । তাই প্রয়োজন পরিমান অর্থ উপার্জন হলেই বাকি সময়টি আপনার পরিবারকে দিন। সৃষ্টিগতভাবেই পিতার ভেতর এমন কিছু বৈশিষ্ট থাকে যা মায়ের মাঝে থাকে না। নারীর তুলনায় পুরুষের শক্তি-সামর্থ্য, কর্মক্ষমতা, রাগ বেশি থাকে। পুরুষ যদি পরিবারের মাঝে থাকে তাহলে এর প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে। আবার পুরুষ যদি পরিবার থেকে দূরে থাকে তাহলে স্ত্রী, সন্তানরা তার এসব বৈশিষ্ট্য হতে বঞ্চিত হয়। এর ফলে তাদের আচার-আচরণে এর একটা বিরূপ প্রভাব পড়ে।
![সুখী পরিবার গঠনে কিছু টিপস্](https://shikhibd.com/wp-content/uploads/2024/06/সুখী-পরিবার-গঠনে-চম-কিছু-টিপস্.png)
২। নিজে নীতিবান হোন : আপনি বুঝুন আর নাই বুঝুন; পরিবারে পুরুষ হচ্ছে একজন আদর্শ, অন্যন্য সদস্যদের কাছে অনুসরণীয়। অধিকাংশ পরিবারে দেখা যায়, পুরুষ যদি সত্যিকারের নীতিবান হয় তাহলে তার স্ত্রী ও সন্তানরাও সেটা অনুসরণ করে। আবার পুরুষ যদি নীতিহীন হয় তাহলে সন্তানরাও সেটা করার চেষ্টা করে। আপনি ভালো বা মন্দ যেটাই হোন না কেন, এটা আপনাকে সন্তানদের শেখাতে হবে না । বরং আপনার অজান্তেই তারা আপনার বৈশিষ্ট্যগুলো আয়ত্ব করে নেবে । অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সন্তান নিজেও বুঝতে পারে না যে, সে কীভাবে পিতার বৈশিষ্ট্যগুলো আয়ত্ব করে ফেলেছে ।
৩। পরিবারে ধর্মচর্চা করুন : আপনি যে ধর্মেরই হোন না কেন, পরিবারে ধর্মচর্চা করুন । পৃথিবীর সকল ধর্মের শিক্ষাই হচ্ছে মানবতার সম্প্রসারণ। তাই নিজেও ধর্মচর্চা করুন, এবং পরিবারেও সেটা চর্চা করার চেষ্টা করুন। মুক্তচিন্তা বা ধর্মহীনতা আপাতদৃষ্টিতে চমৎকার মনে হলেও এর ফল অত্যন্ত বাজে হয়ে থাকে। ব্যক্তির শিক্ষা, মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতার কারণে মুক্তচিন্তাও ভিন্ন ভিন্ন হয় । এক ব্যক্তি অন্যের সম্পদ চুরি করে এনে গরিবদের দিত, সে এটাকে ভালো কাজ বলে মনে করতো অথচ অন্যের সম্পদ চুরি করা ঠিক নয়। গরিবকে সাহায্য করা নিঃসন্দেহে ভালো কাজ তবে এর জন্য বৈধ বিকল্প পথ খোঁজা যেত।
৪। গুরুজনদের সম্মান করুন : আপনার পিতা-মাতা যদি জীবিত থাকেন, তাহলে তাঁদের পরিপূর্ণ সম্মান করুন, সেবা করুন। তাদের প্রতি যত্ন নিন। অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সদ্ব্যবহার করুন। গুরুজনদের প্রতি সম্মান করা দেখে আপনার সন্তানরাও তা শিখবে, পরবর্তিতে এরাও আপনাদের প্রতি সম্মান করবে। সন্তানের প্রতি আপনার এখন যেমন দরদ, মমতা মনে রাখবেন আপনি যখন ছোট ছিলেন তখন আপনার বাবা-মা আপনাকে আপনার বর্তমানের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন। আজ আপনি পিতামাতাসহ অন্যান্য গুরুজনদের সাথে যেমন ব্যবহার করবেন, আপনার বৃদ্ধবয়সেও আপনার সন্তানরা আপনার সাথে তেমন ব্যবহার করবে ।
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম
৫। পরিবার নিয়ে বেড়াতে যান : সময় করে পরিবার নিয়ে বেড়াতে যান । সংসারের একঘেয়েমি থেকে মনকে চাঙা করতে বেড়াতে যাওয়ার বিকল্প নেই । সাগর, নদী, পাহাড়, বন প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করুন। এছাড়াও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যান । তাঁদেরকে উপহার দিন, তাঁদের থেকে ভালো ব্যবহার গ্রহণ করুন । সবার সাথে গল্প করুন। জীবনের গল্প শেয়ার করুন। সবার সাথে পারস্পরিক সহাবস্থান আপনার সন্তানদের সামাজিক সম্প্রীতির প্রতি আকৃষ্ট করবে ।
![সুখী পারিবার গঠনের উপায়](https://shikhibd.com/wp-content/uploads/2024/06/shikhibd-1.jpg)
৬। পরিবারের সদস্যদের চাহিদার দিকে খেয়াল রাখুন : প্রতিটি মানুষেরই কিছু চাহিদা থাকে, যেগুলোকে আমরা মৌলিক চাহিদা বলে থাকি- (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ইত্যাদি)। এসব চাহিদার প্রতি খেয়াল রাখুন। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী পরিবারের সদস্যদের চাহিদা পূরণ করুন। জ্ঞানীজনরা বলে থাকেন,‘সত্যকারের পুরুষরা সন্তানদের সাথে থাকবে শিশুর মতো, আর যখন কোনো চাহিদা পূরণের প্রয়োজন হয় তখন হবে সিংহের মতো।’ এমন যেন না হয় যে পরিবারে কোনো চাহিদা এসে উপস্থিত হলো আর তা পূরণের অভাবে সন্তানরা হতাশ হয়ে পড়লো। এই হতাশা থেকে নানা অসংগতি সৃষ্টি হয়।
৬ মাস বাচ্চার খাবার তালিকা কি হওয়া উচিত? জানুন
৭। পারস্পরিক সহযোগিতা : পরিবারের সকল সদস্যদের কাজে একে অন্যের সহযোগিতা করার চর্চা করুন। সন্তানদেরও শেখানোর পাশাপাশি তাদের এই ধারণা প্রদান করুন যে, অন্যের সহযোগিতা করাটা লজ্জার নয় বরং আনন্দের ।
পরিবার সুখের হলে জীবন সুখের হয়। আর পরিবারে অশান্তি থাকলে জীবন নরকে পরিণত হয়। তাই আসুন আমরা সুখী পরিবার গঠনে যত্নবান হই। আমাদের সবারই প্রত্যাশা থাকে একটু সুখী পরিবারে জীবন যাপন করবো, কিন্তু প্রয়োজনীয় কর্তব্য , দায়িত্ব পালন না করে কেবল সুখের প্রত্যাশা করাটা বোকামী ছাড়া আর কিছুই নয়।