কলা চাষ পদ্ধতি । কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলা চাষ পদ্ধতি । কলা খাওয়ার উপকারিতা : কলা বাংলাদেশের সব জেলায়ই কম বেশি জন্মে। তবে নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, বগুড়া, যশোর, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ এসব জেলায় কলার ব্যাপক চাষ হয় । বাংলাদেশে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে কলার চাষ হয় যা থেকে বছরে ছয় লক্ষাধিক টন কলা পাওয়া যায় । কলা ভিটামিন ও খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ । অন্যান্য ফসলের তুলনায় কলায় ক্যালরির পরিমাণও বেশি। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই কলার চাষ হয়ে থাকে । কলা কাঁচা অবস্থায় তরকারি হিসাবে এবং পাকা অবস্থায় ফল হিসাবে খাওয়া হয়। রোগীর পথ্য হিসাবে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

কলা চাষ পদ্ধতি । কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলা পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় ফল। সহজলভ্যতা, পুষ্টিগুণ, এবং সুস্বাদু হওয়ার কারণে কলা আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্যতম স্থান পেয়েছে। একলা বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান যেমন, ভিটামিন, খনিজ, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এই উপাদানগুলো আমাদের দেহের বিভিন্ন কার্যকারিতাকে সমর্থন করে এবং সুস্থ জীবনের জন্য অপরিহার্য।
কলা ভিটামিন বি৬ এর একটি ভালো উৎস, যা মস্তিষ্কের বিকাশ এবং কার্যকারিতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি সেরোটোনিন এবং নোরপাইনফ্রাইনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের সংশ্লেষণে জড়িত, যা মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ভালো ঘুম নিশ্চিত করে। আসুন আমরা কলা খাওয়ার উপকারিতা বিস্তারিত জেনে নিই :
কলার পুষ্টিগুণ
১. কলা পুষ্টিতে ভরপুর
কলায় রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান। একটি মাঝারি আকারের কলায় প্রায় ১০৫ ক্যালরি, ২৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩ গ্রাম ফাইবার, ১ গ্রাম প্রোটিন, এবং ১৪ গ্রাম চিনি থাকে। এছাড়া কলায় রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, এবং পটাসিয়াম যা শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
কলায় উচ্চ মাত্রায় পটাশিয়াম থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগের অন্যতম কারণ। নিয়মিত কলা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
৩। প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড
কলাতে প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই প্রতিদিন এই ফল খেলে হজমের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্স কমে। এর ফাইবার সামগ্রী পাচনতন্ত্র নিয়ন্ত্রণে ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।
৪। হার্টের স্বাস্থ্য
কলাতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখার জন্য সুপরিচিত। কলাতে স্টেরল যৌগ রয়েছে যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে৷ ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
৫। পেশী গঠনে সহায়তা করে
কলা একটি সুবিধাজনক এবং বহনযোগ্য স্ন্যাক যা পেশীর ক্র্যাম্প প্রতিরোধে সাহায্য করে। ফলটি শক্তি এবং পটাশিয়ামের জন্য কার্বোহাইড্রেটের একটি ভালো ভারসাম্য প্রদান করে। ব্যায়াম-পরবর্তী স্ন্যাকসের জন্য একটি সহজ বিকল্প হতে পারে কলা৷
৬। চোখ ভালো রাখে
কলায় ভিটামিন এ থাকে, যা সুস্থ চোখ বজায় রাখতে এবং দৃষ্টিশক্তিকে ভালো রাখতে প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান।
৭। প্রাকৃতিক স্ট্রেস রিলিভার
কলায় ডোপামিন রয়েছে, যা মস্তিষ্কে ডোপামিন উৎপাদনে অবদান রাখতে পারে। ডোপামিন হলো একটি নিউরোট্রান্সমিটার যা আনন্দের অনুভূতি এনে দেয় আমাদের এবং এটি চাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৮.কিডনি সুস্থ রাখে
কলায় পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি কিডনির কার্যকারিতা বাড়ায় এবং কিডনি রোগের ঝুঁকি কমায়। এটিতে পটাশিয়ামের ধারাবাহিক উপস্থিতি দেওয়ার জন্য কিডনির কার্যকারিতা বাড়ায় এবং কিডনি রোগের ঝুঁকি কমিয়ে তোলে। কলার মাধ্যমে পটাশিয়াম এর স্বাভাবিক স্তর বজায় রাখা যায়, যা কিডনির স্বাস্থ্যকে ধারণ করে সাহায্য করে।
৯. রক্তস্বল্পতা দূর করে
কলায় থাকা আয়রন রক্তাল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাড়ায়, যা রক্তস্বল্পতা দূর করে। অ্যানিমিয়া হলে শরীরে ক্লান্তির অনুভূতি হতে পারে, এবং শ্বাসকষ্ট অনুভূতি করতে পারেন। কলা একটি অত্যন্ত উপকারী ফল যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। আয়রন রক্তে লোহিত রক্তকণিকা গঠনে সাহায্য করে এবং ভিটামিন বি৬ রক্তে গ্লুকোজ মেটাবলিজমের প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখে।
১০. স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
কলায় থাকা ভিটামিন বি৬ এবং ম্যাগনেসিয়াম মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। তাই পড়াশুনার সময় বা যে কোনও মানসিক কাজে কলা খাওয়া উচিত।
১১. মানসিক চাপ কমায়
কলায় থাকা পটাসিয়াম এবং ভিটামিন বি৬ মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক। এটি নার্ভের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।
১২. চুলের যত্ন
কলার পেস্ট চুলে লাগালে চুল মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়। কলায় থাকা পটাশিয়াম এবং ভিটামিন চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুলের বৃদ্ধি বাড়ায়।
১৩. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক
কলায় থাকা বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যাল দূর করে, যা ক্যান্সার সৃষ্টির অন্যতম কারণ। বিশেষ করে কলায় থাকা ভিটামিন সি এবং ফ্ল্যাভোনয়েড ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।
১৪. হাড়ের শক্তি বাড়ায়
কলায় ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক। নিয়মিত কলা খেলে হাড় মজবুত হয় এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমে।
১৫. ভিটামিনের ঘাটতিটি পূরণ করে :
ভিটামিন ঘাটতি পূরণের জন্য কলা অত্যন্ত দারুণ সম্পন্ন। গড়ে একটি কলা আমাদের দৈনন্দিন ভিটামিন বি৬ চাহিদার পাঁচ শতাংশ পূরণ করতে পারে। এটি শরীরের সুস্থ কোষ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ইনসুলিন, হিমোগ্লোবিন এবং অ্যামিনো অ্যাসিড গঠনে সাহায্য করে। এছাড়াও, ভিটামিন সি দৈনন্দিন চাহিদা ১৫ শতাংশ কলা পূরণ করে।
১৬. হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
কলায় থাকা ফাইবার হজম শক্তি বাড়ায়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং পরিপাকতন্ত্রকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।
১৭. শক্তি বৃদ্ধি করে
কলায় থাকা প্রাকৃতিক চিনি এবং কার্বোহাইড্রেট তাৎক্ষণিক শক্তি প্রদান করে। তাই অনেকে একে ‘প্রকৃতির এনার্জি বার’ বলেন। ব্যায়ামের আগে বা পরে কলা খেলে তাৎক্ষণিক এনার্জি পাওয়া যায়।
১৮. মেজাজ ভালো রাখে
কলায় থাকে ট্রিপটোফ্যান নামক একটি উপাদান মস্তিষ্কে সেরোটোনিন হরমোনের উৎপাদন বাড়ায়। সেরোটোনিন হরমোন মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং বিষণ্ণতা দূর করে। এছাড়াও, প্রতিটি কলায় গড়ে ২৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা মন ভালো রাখতে এবং ভালো ঘুম পাওয়ার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
১৯. ওজন কমাতে সহায়ক
কলায় ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি। ফলে এটি খেলে পেট ভরে যায় এবং ক্ষুধা কম লাগে। তাই যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য কলা একটি আদর্শ ফল।
২০. ত্বকের যত্নে
কলার মাখন ত্বকে লাগালে ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়। কলায় থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের জৌলুস বাড়াতে সাহায্য করে।
সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের নাম ও জীবন বৃত্তান্ত
কলা চাষ পদ্ধতি
কলার জাত
বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে যেসব কলার জাত চাষ করা হয় সেগুলো হচ্ছে অমৃতসাগর, সবরি, চাপা, মেহেরসাগর, কবরী ইত্যাদি। এ ছাড়াও কলার আরও অনেক জাত আছে যেমন : এঁটে কলা, বাঙলা কলা, জাহাজি কলা, কাচকলা বা আনাজি কলা ইত্যাদি। তবে বারি কলা-১, বারিকলা-২ ও বারিকলা-৩ নামে তিনটি উন্নত জাত চাষের জন্য অবমুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বারিকলা-২ জাতটি কাঁচকলার ।
কলার উৎপাদন প্রযুক্তি : কলার উৎপাদন প্রযুক্তিগুলো হচ্ছে মাটি ও জমি তৈরি, রোপণের সময় ও চারা রোপণ, সার প্রয়োগ পদ্ধতি, অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা ইত্যাদি ।
মাটি ও জমি তৈরি
উর্বর দোআঁশ মাটি কলা চাষের জন্য ভালো। জমিতে প্রচুর সূর্যের আলো পড়বে এবং পানি নিকাশের ব্যবস্থা থাকবে । গভীরভাবে জমি চাষ করে দুই মিটার দূরে দূরে ৫০ সেমি X ৫০ সেমি x ৫০ সেমি আকারের গর্ত খুঁড়তে হবে। চারা রোপণের প্রায় একমাস আগে গর্ত করে গর্তে গোবর ও টিএসপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে গর্ত পূর্ণ করতে হবে ।
কলা চাষের উপযুক্ত সময়
বছরে তিন মৌসুমে কলার চাষ করা হয় বা কলার চারা রোপণ করা হয়: ১। আশ্বিন-কার্তিক ২ । মাঘ-ফাল্গুন ৩। চৈত্র-বৈশাখ
কলার চারা নির্বাচন
কলার চারাকে তেউড় বলা হয় । দুই রকমের তেউড় দেখা যায় । যথা :
১। অসি তেউড় (Sword Sucker ) ২। পানি তেউড় (Water Sucker )
১। অসি তেউড় : কলা চাষের জন্য অসি তেউড় উত্তম। অসি তেউড়ের পাতা সরু, সুচালো এবং অনেকটা তলোয়ারের মতো । গোড়ার দিকে মোটা এবং ক্রমশ উপরের দিকে সরু হতে থাকে।
২। পানি তেউড় : পানি তেউড় দুর্বল । এর আগা-গোড়া সমান থাকে । কলা চাষের জন্য এই চারা উপযুক্ত নয় । এ দুই ধরনের চারা ছাড়াও সম্পূর্ণ মূলগ্রন্থি বা তার ক্ষুদ্র অংশ থেকেও কলা গাছের বংশবিস্তার সম্ভব । তবে এতে ফল আসতে কিছু বেশি সময় লাগে। ফলন্ত ও অফলন্ত দুই ধরনের গাছেরই মূলগ্রন্থি চারা হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
জানাজার নামাজের নিয়ম ও দোয়া (অর্থ ও উচ্চারণসহ)
কলার চারা রোপণ
চারা রোপণের জন্য প্রথমত অসি তেউড় বা তলোয়ার তেউড় নির্বাচন করতে হবে। খাটো জাতের ৩৫-৪৫ সেমি আর লম্বা জাতের ৫০-৬০ সেমি দৈর্ঘ্যের তেউড় ব্যবহার করা হয়। অতঃপর নির্দিষ্ট গর্তে যাতে প্রয়োজনীয় গোবর ও টিএসপি সার দিয়ে পূর্ণ করা হয়েছে সেখানে চারা লাগাতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে যেন চারার কাণ্ড মাটির ভিতরে না ঢুকে ।
কলা চাষে সার প্রয়োগ
কলা গাছে ব্যবহৃত সারের নাম ও গাছ প্রতি সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো :
| সারের নাম | গাছ প্রতি পরিমাণ | প্রয়োগ করার সময় |
| ইউরিয়া | ৫০০-৬৫০ গ্রাম | চারা রোপণের ১ মাস পূর্বে গর্ত করে গোবর/ আবর্জনা সার ও ৫০% টিএসপি মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। রোপণের ২ মাস পর বাকি ৫০% টিএসপি, ৫০% এমওপি ও ২৫% ইউরিয়া গাছের গোড়ার চারদিকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। এর ২ মাস পর বাকি ৫০% এমওপি ও ৫০% ইউরিয়া এবং ফুল আসার সময় বাকি ২৫% ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে। |
| টিএসপি | ২৫০-৪০০ গ্রাম | |
| এমওপি | ২৫০-৩০০ গ্রাম | |
| গোবর/আবর্জনা সার | ১৫-২০ কেজি |
কলা গাছের পরিচর্যা
সেচ ও নিকাশ
কলার জমিতে আর্দ্রতা না থাকলে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে ১৫-২০ দিন পর পর সেচ দেওয়া দরকার । বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি নিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় নালা কেটে দিতে হবে। কারণ কলাগাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না ।
এশিয়া মাহাদেশের দেশগুলোর নাম রাজধানী ও মুদ্রা
অতিরিক্ত চারা কাটা
ফুল বা মোচা আসার পূর্ব পর্যন্ত গাছের গোড়ায় যে তেউড় জন্মাবে তা কেটে ফেলতে হবে । মোচা আসার পর গাছ প্রতি ১টি তেউড় রাখা ভালো ।
খুঁটি দেওয়া
কলাগাছে ছড়া আসার পর বাতাসে গাছ ভেঙে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাঁশ বা গাছের ডাল দিয়ে খুঁটি বেঁধে
দিতে হবে ।
পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা
কলাগাছ ফল ও পাতার বিটল পোকা, রাইজম উইভিল, থ্রিপস এসব পোকা দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে । ডায়াজিনন ৬০ ইসি পানির সাথে মিশিয়ে স্প্রে করে এ পোকা দমন করা যায় ।
কলা গাছের রোগ
কলা ফল চাষের সময় প্রধানত তিনটি রোগের আক্রমণ দেখা যায় । যথা-
১। পানামা রোগ
২। সিগাটোগা
৩। গুচ্ছ মাথা রোগ ।
১। পানামা রোগ : এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগের আক্রমণে গাছের পাতা হলদে হয়ে যায়। পাতা বোটার কাছে ভেঙে ঝুলে যায় এবং কাণ্ড অনেক সময় ফেটে যায়। আক্রান্ত গাছ ধীরে ধীরে মরে যায় অথবা ফুল-ফল ধরে না। রোগের প্রতিকার হিসাবে রোগমুক্ত গাছ লাগাতে হবে, রোগক্রান্ত গাছ তুলে ফেলে দিতে হবে এবং প্রতিরোধী জাত রোপণ করতে হবে। এ ছাড়া টিল্ট-২৫০ ইসি ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় আক্রান্ত গাছে প্রয়োগ করলে সুফল পাওয়া যাবে। ২। সিগাটোগা : এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ । এ রোগের আক্রমণে পাতার উপর গোলাকার বা ডিম্বাকৃতির গাঢ় বাদামি রঙের দাগ পড়ে। আক্রমণ ব্যাপক হলে পাতা ঝলসে যায় ও সমস্ত পাতা আগুনে পোড়ার মতো দেখায়। ফলে ফল ছোট হয় এবং ফলন কম হয়। রোগের প্রতিকার হিসাবে আক্রান্ত গাছের পাতা কেটে পুড়িয়ে
ফেলতে হবে।
৩। গুচ্ছ মাথা রোগ : এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। জাব পোকার মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায় । ম্যালাথিয়ন বা অন্য যে কোনো অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগে জাব পোকা দমন করে এ রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যায় ।
ফসল সংগ্ৰহ
১। চারা রোপণের পর ১১-১৫ মাসের মধ্যে সব জাতের কলা সংগ্রহের উপযুক্ত হয়।
২। ধারালো দা দিয়ে কলার ছড়া কাটতে হবে ।
ফলন
ভালোভাবে কলার চাষ করলে গাছ প্রতি প্রায় ২০ কেজি বা প্রতি হেক্টরে প্রায় ২০-৪০ টন কলা উৎপাদিত হবে ।
কলা চাষ পদ্ধতি ও কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আরও জানতে পারেন উইকিপিডিয়া থেকে । ধন্যবাদ ।



